বান্দরবানে ব্যক্তিমালিকানার বন বাগানের জোত পারিমিট ও বৈধভাবে কাঠ সরবরাহের বিরদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র শুরু হওয়ায় পাহাড়ের প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারীসহ দুর্গম এলাকার শতাধিক আদিবাসী বাগান মালিকরা বিপাকে পড়েছেন।
চলমান বৈধ জোতপারমিট ও কাঠ ব্যবসার বিরুদ্ধে ইদানিং কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ঢাকার একটি দৈনিক পত্রিকা ওইসব কুচক্রি মহলের যোগসাজশে অপপ্রচার ও উদ্দেশ্যমুলক মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তোলার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন সচেতন নাগরিকরা। এতে অবৈধ কাঠ পাচারকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠবে এবং সরকারি বনজ সম্পদ রক্ষাকরা কঠিন হয়ে পড়তে পারে বলেও শংকা প্রকাশ করেছেন বন বাগানের মালিকরা।
জেলার রুমা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারমম্যান এবং বম আদিবাসী নেতা জিমসিয়াম বম এবং থানছি উপজেলর সাংবাদিক অনুপম মারমা জানান, ব্যক্তিমালিকানাধীন বনজ বাগান থেকে সরকারি বিধিমোতাবেক পরিপক্ক বনজ সম্পদ কর্তন,আহরণ এবং সরবরাহের কার্যক্রম প্রচলিত নিয়মেই চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
রুমা বটতলী পাড়ার বাগান মালিক সামং মারমা ও কাঠ ব্যাবসায়ী আকাশ চৌধুরী জানান, সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসন ও বন বিভাগের ইস্যুকৃত বৈধ পারমিট ও টিপি ব্যবহারের মাধ্যমে নদী ও সড়কপথে স্থাপিত বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী, বিজিবি,পুলিশ ও বন বিভাগের চেক পোষ্টের কর্মকর্তাদের পরীক্ষণ ভিত্তিতেই কাঠ সরবরাহ হচ্ছে জেলা সদরে। ফলে অবৈধ কাঠ পাচার বন্ধ হওয়ার পাশপাশি জেলার রুমা, থানছি এবং রোয়াংছড়ি উপজেলার প্রায় ৯০ শতাংশ আদিবাসী বাগান মালিকরা তাদেরই সৃজিত বন বাগানের গাছ ও কাঠ বিক্রিত অর্থে জীবন জীবিকা নির্বাহ এবং সন্তানদের লেখাপড়ার কাজে অর্থযোগান দিতে সক্ষম হচ্ছেন।
থানছি মদুকসে পাড়া বাগানের মালিক চিংসা মারমা বলেন, জোতপারমিটের মাধ্যমে বৈধভাবে তারা নিজের বাগানের গাছপালা বিক্রি করে আসছেন। এ অবস্থা কোন কারণে রুদ্ধ হয়ে গেলে এলাকার কাঠের সাথে সম্পৃক্ত প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী এবং শতাধিক বাগান মালিক চরম অর্থসংকটের সম্মুখিন হবেন। ফলে দেখা দিতে পারে চরম অস্থিরতা ।
বান্দরবান পাল্পউড প্লান্টেশন বনবিভাগরে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোল্যা রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুসরণ ও নির্দেশনায় এবং স্থানীয় প্রশাসনের আইনি সহযোগিতার মাধ্যমে জেলায় চালু রয়েছে জোতপারমিট প্রথা। তারই ভিত্তিতে রুমা,থানছি,রোয়াংছড়ি ও আলীকদম উপজেলার নানাস্থান থেকে পাহাড়িদের ব্যক্তিমালিকানার বন বাগান থেকে সম্পুর্ণ বৈধভাবেই পরিপক্ক গাছ কর্তন,আহরণ এবং সরবরাহ করা হয় জেলা সদরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ফলে এখানে সাংগু ও মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে বা সরকারি বন বাগানের কোন গাছপালা কর্তন বা পাচারের কোন সুযোগ নেই। বন বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অহেতুল হয়রানি ও সুনাম ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্যেই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এসব এলাকায় নিয়োজিত বন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলসভাবে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা সদায় প্রস্তুত রয়েছেন সরকারি বন রক্ষায় এবং যে কোন ধরনের অবৈধ কাঠ আটকে ।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.