প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে বর্তমান সরকার অত্যন্ত আন্তরিক বলে উল্লেখ করে বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের কল্যাণে পর্যায়ক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুৃক্তির পূর্নাঙ্গরুপে বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বান্দরবানে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠারও ঘোষান দেন।
সোমবার বান্দরবানে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কথা বলেন।
বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে উপস্থিত জনসাধারনের সাথে কথা বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এমপি ও স্বাস্থ্য সচিব এমএম নিয়াজউদ্দিন।
“মশা-মাছি দূরে রাখি: রোগ বালাই মুক্ত থাকি” এ প্রতিপাদ্যে বিষয়কে সামনে রেখে আয়োজিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য সচিব এমএম নিয়াজউদ্দিন। অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্যে দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এমপি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ খালেক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক নূর হোসেন তালুকদার, বান্দরবন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.দীন মো: নূরুল হক, বিএমএ সভাপতি অধ্যাপক মাহমুদ হাসান, মহাসচিব অধ্যাপক এম ইকবাল আর্সলান, পার্বত্য জেলার বোমং সার্কেল চিফ বোমংগ্রী উচপ্রু, জেলা প্রশাসক কেএম তারিকুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. তুষারা ফার্ন্দাদেজ প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে এডিএম ইশরাত জামান, সিভিল সার্জন ডা.মং তেসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদ্বোধনের আগে সকাল সাড়ে ৯টায় একটি বর্নাঢ্য র্যালী বের করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এমপির নেতৃত্বে র্যালিটি বের হয়। র্যালিটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়। শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিটিউটের সামনে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
অপরদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা কলেজ পড়ুয়া ছাত্র মংহাইচিং মারমা, সুজন তঞ্চঙ্গ্যা, উমেসিং মারমা তাদের ক্ষোভের কথা জানান, ঢাকা থেকে পার্বত্যাঞ্চলে এসে মন্ত্রী, সচিবরা অনেক প্রতিশ্রুতি দেন। এখান থেকে চলে যাওয়ার পর সব ভুলে যান! ঢালঢোল পিটিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস করে কি লাভ? হাসপাতলে চিকিৎসক না থাকলে, ঔষধ পাওয়া না গেলে এই দিবস করে তাদের কোনো লাভ নেই। জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া বান্দরবনের আরও কয়েকজন আদিবাসী উক্যমং মারমা, ক্য হ্লা খয় মারমা, উথোয় মারমার কণ্ঠেও বিভিন্ন এলাকার সমস্যা নিয়ে ক্ষোভ জানালেন। তারা বললেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই ১৯৯৭ সালে পার্বত্য অঞ্চলে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি করেছিলেন। কিন্তু আজও চুক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। অধিকাংশ চুক্তিই বাস্তবায়ন করেননি। পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ পার্বত্য চুক্তির পূর্ন বাস্তবায়ন চায়।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যানমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, অন্যান্য অঞ্চলের সাথে সমানভাবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেক্টরে পিছিয়ে থাকা পার্বত্য অঞ্চলকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারও বদ্ধপরিকর। এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশ রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।
মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, পার্বত্যঞ্চলসহ সকল দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে কর্মস্থলে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নেই। চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে অবকাঠামো নির্মাণ থেকে শুরু করে বেতন-ভাতা বৃদ্ধিতে সরকার ইতোমধ্যে উদ্যোগ গ্রহন করেছে।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.