বান্দরবানের লামায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন কায়সার জাহিদ আহমেদ(৩৫)। তিনি কোয়ান্টাম কসমো স্কুল এন্ড কলেজের ডেপুটি স্পোর্টস লিডার, খো-খো ও হ্যান্ডবল টিমের হেড কোচ ছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয় হ্যান্ডবল দলের সহকারি কোচ এবং খো খো-র জাতীয় দলের কোচ ছিলেন। এছাড়া তিনি খো-খো ও হ্যান্ডবলের দল নেতা হয়ে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
উল্লেখ্য, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার হ্যান্ডবল ইভেন্টে উপজেলা পর্যায়ের একটি খেলার জন্যে কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের বালিকা হ্যান্ডবল দলকে নিয়ে বান্দরবানের লামা সদর উপজেলায় যান কোচ কায়সার জাহিদ। দলটির ১২ জন মেয়ে কোয়ান্টা ছাড়াও এসময় তার সাথে ছিলেন নারী কোচ খাদিজা আক্তার, তত্ত্বাবধায়ক জেসমিন পারভীন এবং কসমো স্কুলের স্পোর্টস লিডার শাহ আলম। টুর্নামেন্টে ৯-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের বালিকা হ্যান্ডবল টিম। টুর্নামেন্ট শেষে কোয়ান্টামমে ফেরার পথে গজালিয়া ডিসি রোডে তাদের জিপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায় ১০০ ফুট গভীর খাদে। টহলরত সেনাসদস্যরা খুব দ্রুত আহতদের নিয়ে যান লামা উপজেলা সদর হাসপাতালে। আহত সাতজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কায়সার জাহিদ আহমেদ। মাথা এবং বাম বুকে গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গভীর রাতে চট্টগ্রাম থেকে তার লাশ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন ফাউন্ডেশন কর্মীরা। সকালে লাশ বনশ্রীতে তার বাসায় এসে পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্ত্রী ও এক বছরের একটি কন্যাসন্তান ছাড়াও জাহিদ আহমেদের ছিলেন তিনবোন ও মা-বাবা।
জানা যায়, কোয়ান্টাম কসমো স্কুল এবং তিনিঃ ২০০৪ থেকে কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের খো-খো ও হ্যান্ডবলের খণ্ডকালীন কোচ হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০১২ থেকে পুরোপুরি যোগ দেন তিনি কোয়ান্টামে, যাতে কোয়ান্টাদের নিবিঢ়ভাবে সময় দেন।
আরো জানা যায়, ২০১৭ এবং ২০১৮- পর পর দুবছর ধরে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল এন্ড কলেজ ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশ সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’ মনোনীত হয়েছে। জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার একাধিক ইভেন্টে অসাধারণ সব সাফল্যেরই স্বীকৃতি এই অর্জন। আর বান্দরবানের একটি প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলের পক্ষে শহরের সেরা স্কুল ও ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পেছনে ফেলে এ অর্জন খুব সহজসাধ্য ছিল না! কোচ কায়সার জাহিদের মতো নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা তেল হয়ে পুড়েছিলেন বলেই কোয়ান্টামের সাফল্যগাথায় যুক্ত হয়েছে এ অর্জন। ব্যক্তিগত জীবনে কোচ কায়সার জাহিদ বিবাহিত। তার এক বছর বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে। এছাড়া মা, বাবা এবং ভাই-বোন রেখে গেছেন।
আহতদের দেখতে সদর হাসপাতালে যান আলী কদম জোন কমান্ডার লেফটেনেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পিএসসি এবং তার উত্তরসুরি লেফটেনেন্ট কর্নেল সাইফ শামীম পিএসসি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.