জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার সন্তু লারমার ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনকে রাজপথে মোকাবেলা করা হবে উল্লেখ করে বলেছেন অসহযোগ আন্দোলনের নামে সহিংসতা করে পাহাড়ে অশান্তি আর অরাজগতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তা প্রতিহত করবে। তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চুক্তির অধিকাংশ ধারা সরকার বাস্তবায়ন করলেও জনসংহতি সমিতি’র অসহযোগিতার কারণে চুক্তির অনেক ধারাই এখনো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। পার্বত্য চুক্তি নিয়ে জনসংহতি সমিতি ক্রমাগত সত্য গোপন করে অসত্য তথ্য দিয়ে জনমনে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করে চলেছে। সোমবার রাঙামাটিতে পার্বত্য চুক্তির ১৭তম বর্ষপূর্তি প্রাক্ককালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এসব কথা বলেন। জেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং এ এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবৃবৃর রহমান, চিংকিউ রোয়াজা, রুহুল আমীন, সাধারন সম্পাদক হাজী মোঃ মুছা মাতব্বর, যুগ্ন সম্পাদক সন্তোষ চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক কেরল চাকমা, অভয় প্রকাশ চাকমা প্রমুখ। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবান জানিয়ে দীপংকর তালুকদার বলেন, নির্বাচন না হওয়ায় ১৭ বছর ধরে পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ জনসংহতি সমিতির দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, পার্বত্য ভূমি কমিশনের কাজ শুরু করা যায়নি সরকার ও আঞ্চলিক পরিষদের মধ্যে তিনটি বিষয়ে ঐকমত্য না হওয়ায়। উদ্যোগ নেয়া সত্ত্বেও সম-অধিকার আন্দোলনসহ কিছু মহলের বিরোধিতার কারণে পরিস্থিতির বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে এমন আশংকায় আলাদা পুলিশবাহিনী গঠন ও হস্তান্তর সম্ভব হয়নি। কিন্তু জনসংহতি সমিতির সাবেক ৭শ’ সদস্যকে পুলিশে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা এখন পাহাড়ি-বাঙালি মিশ্র পুলিশবাহিনীর মতো পার্বত্য চট্টগ্রামে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত। কাজেই এ বিষয়টির আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে। অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন বিষয়ে দীপংকর তালুকদার বলেন, জনসংহতি সমিতি দাবি করছে জুম্ম উদ্বাস্তু। কিন্তু চুক্তিতে তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখেও কোথাও জুম্ম শব্দটি নেই। এজন্য বিষয়টি অমিমাংসিত। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি শান্তিচুক্তির স্বীকৃত অংশ। আগে এটি পরিচালিত হতো অর্ডিন্যান্স দ্বারা। পরে আইনে পরিণত করতে আঞ্চলিক পরিষদের মতামত চাওয়া হলে তারা উন্নয়ন বোর্ড বাতিলের দাবি জানায়। এতে তারা চুক্তির সংশ্লিষ্ট ধারা স্পষ্ট লংঘন করে চুক্তির স্ববিরোধিতা করেছে। গত সংসদ নির্বাচনে জনসংহতি সমিতি ভোট ডাকাতি করেছে বলে দাবি করে দীপংকর বলেন, তাদের মুখে জনমতের কথা মানায় না। আমরা অবিলম্বে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচন চাই। কারণ নির্বাচিত পরিষদ ছাড়া এসব পরিষদে কখনও স্বচ্ছতা ও জবাবদীহিতা নিশ্চিত সম্ভব হবে না। জনসংহতি সমিতি একদিকে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনের সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করলেও রাঙ্গামাটি থেকে বিজয় রতন দে (পান বিজয়) ও লাল এংলিয়ানা পাংখোয়া নামে দু’জনকে জেলা পরিষদের সদস্য মনোনয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করেছেন জনসংহতির সমিতির সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার। তিনি বলেন, জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ পার্বত্য চট্টগ্রামে হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, গুম, অপহরণ চালিয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ে চলমান সন্ত্রাস. চাঁদাবাজী ও অপহরণ বন্ধে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতেও সরকারের প্রতি আহবান জানান।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.