সম্প্রতি তিন পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর কাছে পর্যটন বিভাগ হস্তান্তরের নামে সরকার পার্বত্যবাসীর সাথে প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী পর্যটন বিভাগের হস্তান্তরের প্রক্রিয়া যথাযথ হয়নি উল্লেখ করে আরও বলেন, গত ২৮ আগষ্ট ঢাকায় সরকারের সাথে পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর মধ্যে যে চুক্তি সই হয়েছে তাতে কি ধরনের বিষয় নিয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। তাই সরকার উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিতভাবে পর্যটন বিভাগকে পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর দেখিয়ে জনগনকে ধোকা দিয়েছে। বুধবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট ও ফার্নিচার শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন। আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থা আই এলও এবং রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইপ্রু চৌধুরী। বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জাকির হোসেন, আই এল ও’র ঢাকাস্থ ডেপুটি ডিরেক্টর গগন রাজ ভান্ডারী, বিএসইপি প্রজেক্টের ডেপুটি ডিরেক্টর ফ্রান্সিস ডি সিলভা, জেলা পরিষদ সদস্য বৃষকেতু চাকমা। দুদিন ব্যাপী কর্মশালায় জেলার হোটেল মালিক ও কর্মচারি সমিতি, ফার্নিচার ব্যবসায়ী ও কর্মচারি সমিতি, হেডম্যান এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর প্রতিনিধি মিলে মোট ৫০জন অংশগ্রহণ করেন । কর্মশালায় ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট ও ফার্নিচার শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় এবং এ উপস্থাপনার উপর ভিত্তি করে অংশগ্রহণকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে দক্ষতা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্র ও চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরে সুপারিশমালা প্রণয়ন করা হবে আয়োজক কমিটির সূত্রে জানা গেছে। সন্তু লারমা তার বক্তব্যে আরও বলেন, আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ভবিষ্যতে ট্যুরিজম ব্যবসায় বড় ধরনের ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া পার্বত্য এলাকায় ফার্নিচার ব্যবসার কারণে পার্বত্য এলাকায় জীব বৈচিত্র ও জলবায়ুর অনেকটা পরিবর্তন ঘটেছে। এ বিষয়ে সচেষ্ট না হলে এর নৈতিবাচক প্রভাব আরও বাড়ার আশংকা প্রকাশ করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি পার্বত্য এলাকায় এগ্রোফুড ও ফার্মাাসিউটিক্যাল বিষয়ে জোর দেয়ার উপর গুরুত্বারোপও করেন। উল্লেখ্য গত ২৮ আগষ্ট ঢাকায় পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী হস্তান্তরিত বিভাগের মধ্যে পর্যটন বিভাগটি তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের সাথে পর্যটন মন্ত্রনালয়ের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.