ঈদের ছূটিতে বাংলাদেশের দার্জিলিং খ্যাত পার্বত্য বান্দরবানে পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে। পর্যটকদের পদচারনায় বান্দরবান পর্যটন শহর এখন অন্যরকম এক আমেজ বিরাজ করছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের জন্য নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে পাহাড়,ঝিরি-ঝর্ণা আর সবুজ-শ্যামল প্রকৃতির নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে দেশ-বিদেশের ভ্রমন পিসাসু পর্যটকরা ছুটে আসেন পাহাড় কন্যা বান্দরবানে। এবার ঈদের ছুটিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বান্দরবানে প্রতিটি পর্যটন স্পটে এখন পর্যটকদেও উপচে পড়ার ভিড়। পর্যটকদের পদভারে অন্যরকম এক আমেজ বিরাজ করছে।
এদিকে, বান্দরবানে কোন হোটেল-মোটেল ও গেষ্ট হাউসে রুম খালি নেই। সব রুম বুকড। ঈদের আগে থেকেই নিমিষেই রুম বুকড হয়ে গেছে।
অফুরন্ত সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যর লীলাভূমি বান্দরবানে রয়েছে অসংখ্য পর্যটন স্পট। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ বিজয়, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কেউক্রাডংসহ অসংখ্য সু-উচ্চ পাহাড়। রয়েছে বাংলার দির্জিলিং খ্যাত চিম্বুক,নীলগিরি। যেখানে অনায়াসে মেঘের ছোঁয়া পাওয়া যায়। এছাড়াও রিঝুক ঝর্ণা নিজস্ব গতিতে সব মৌসুমেই থাকে সচল। এছাড়া জেলা সদরেই রয়েছে মেঘলা, নীলাচল, প্রান্তিক লেক, স্বর্ণ জাদি ( যা লোকমুখে স্বর্ণ মন্দির হিসেবে অধিক পরিচিত ) যা না দেখলে সৌন্দর্য্য দেখার অপূর্ণ থেকে যাবে। নীলাচলে দাড়াঁলে পাহাড় আর আকাশের মিতালী, দুরে সবুজ বন কিংবা চটগ্রামের সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য্যর আবছা আবছা উপভোগ করা যায়। পাহাড় থেকে শহরের সৌন্দর্য্য বিমোহিত করে পর্যটকদের। বৌদ্ধ ধাতু জাদি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থ স্থান হলেও পাহাড়ের উপর সুন্দর কারুকার্য ও স্বর্ণাভরণে তৈরী হওয়ায় এটিও পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্পট হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে। বান্দরবান চিম্বুক সড়কের ৫কিঃমিঃ এলাকায় রয়েছে শৈল প্রভাত ঝর্ণা।
বান্দরবান-থানচি সড়কের ২৫কিঃমিঃ দুরে রয়েছে পর্বত চুঁড়া চিম্বুক পাহাড়। একই সড়কে ৫০কিঃমিঃ দুরে গড়ে উঠেছে বাংলার দার্জিলিং খ্যাত নীলগিরি। সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত নীলগিরিতে দাড়াঁলে পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দেশের অভ্যন্তর থেকে উৎপত্তিকৃত সাঙ্গু নদীর অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়। বান্দরবানের রুমা উপজেলায় রয়েছে দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ বিজয়,এটি তাজিংডং নামেই পরিচিত। রুমা উপজেলা থেকে ৩০কিঃমিঃ পাহাড়ী রাস্তা অতিক্রম করে যেতে হয় তাজিংডং পাহাড়ে,পাশেই রয়েছে দেশের দ্বিতীয় পর্বত চুঁড়া কেউক্রাডং পাহাড়। এছাড়া একই সড়কে ১৭কিঃমিঃ গেলে দেখা যায় কিংবদন্তী বগালেক। এটি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্পট। এছাড়াও এ জেলায় মারমা, ত্রিপুরা, মুরুং, বম, তঞ্চঙ্গ্যা, খুমি, খেয়াং, পাংখোয়া, চাকমা, চাক, লুসাই, বাঙ্গালীসহ ১২টি আদিবাসী সম্প্রদায় বসবাস করে। আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় জীবনচিত্র মানুষের মনকে উৎফুল্ল করে তোলে।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পয়েন্টে পয়েন্টে রাখা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.