সমকাল-বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের(বিএফএফ) দশম জাতীয় বিজ্ঞান বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। এতে রানার্স-আপ হয়েছে সাপছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় দল। শ্রেষ্ঠ বক্তা হয়েছে সাপছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিযোগিতার দল নেতা মাহামুদা আক্তার। শুক্রবার রাঙামাটিতে এ উৎসব মুখর পরিবেশে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয় হলরুমে আয়োজিত পুরুস্কার বিতনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও চাকমা রাজ পরিবারের অন্যতম সদস্য চাঁদ রায়। রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রণতোষ মল্লিকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা। বক্তব্যে দেন রাঙামাটি বিএম ইনষ্টিটিউটের শিক্ষক আনন্দ জ্যোতি চাকমা ও উন্নয়ন কর্মী সুপলভ চাকমা। স্বাগত বক্তব্য দেন দৈনিক সমকালের রাঙামাটি অফিসের ষ্টাফ রিপোর্টার সত্রং চাকমা। অর্ধ দিবস ব্যাপী ক্ষুদে বির্তাকিতদের তীব্র প্রতিযোগিতা পূর্ন বিতর্কের মধ্য দিয়ে বির্তকের সমাপ্তি ঘটে। পরে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স-অপ দলকে পুরুস্কার দেওয়া হয়। এতে জেলা পর্যায়ের চ্যাম্পিয়ন দল লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থি ত্রিশিলা দাশ (দলনেতা), সর্ম্পূনা চৌধরী, তাসমিয়া তাবাসসুম এবং রানার্স-আপ দল সাপছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাহামুদা আক্তার(দলনেতা),নুসরাত জাহান, উম্মে সালমার হাতে সনদপত্র ও ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথিরা। এছাড়া ৭টি বিদ্যালয়ে অংশগ্রহনকারী বিতার্কিতদের কাছেও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। চ্যাম্পিয়ন দলের লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থি ত্রিশিলা দাশ (দলনেতা) জানায়, লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের একাদশ শ্রেনীর ছাত্র মোঃ আব্দুল্লাহ জুবায়ের গত ২৯ ফেব্রæয়ারী অকাল মৃত্যুতে তার বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মর্মাহত ও শোকাহত। এ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ট্রপি মোঃ আব্দুল্লাহ জুবায়ের নামে উৎসর্গ করছি।
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া দলগুলো হল, লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, সাপছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, রাঙামাটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়,ভেদভেদী পৌর উচ্চ বিদ্যালয়, শহীদ আব্দুল আলী একাডেমী, মোনঘর আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয় ও রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থিদের পারস্পারিক সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ও যুক্তি-তর্কের মধ্য উৎসবটি প্রাণবন্ত হয়ে উঠে। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাংবাদিক সুশীল প্রসাদ চাকমা। বিচারক হিসেবে ছিলেন বিএম ইনিষ্টিটউটের শিক্ষক আনন্দ জ্যোতি চাকমা, টিআইবি রাঙামাটির এরিয়া ম্যানেজার বেনজিন চাকমা, এক সময়ের তুখোড় বির্তাকিত ফিরোজ আল মাহমুদ সোহেল, এনজিও কর্মকর্তা সুপলভ চাকমা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নিরূপম চাকমা, বিপ্লব মজুমদার সাংবাদিক সৈকত রঞ্জন চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ চাঁদ রায় বলেন, প্রতিযোগিতায় হার-জিত থাকবেই। তবে প্রতিযোগিতায় যারা বিজয়ী হয়েছে তাদের কাছ থেকে শেখারও রয়েছে। তারা কিভাবে প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করা হয় ঠিক তেমনি করে বিদ্যালয়ে নিজেদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বার্ষিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা দরকার। এছাড়া ক্যারিকুলামে এমনকি সিলেবাসেও বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিষয়টি অর্ন্তভূক্ত করা প্রয়োজন। তাহলে ভালো মানের বিতার্কিত উঠে আসবে। তারা জেলা পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায়ে গিয়ে আর্ন্তজাতিকভাবে বির্তক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন নেবে। আর রাঙামাটি থেকে ভালো বিতার্কিত গড়ে উঠলে আর্ন্তজাতিক বির্তক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করতেও পারে।
তিনি বলেন, এখন যুগটা হচ্ছে বিশ^ায়ন যুগ। এখানে মিডিয়ার ভালোর দিকটাও রয়েছে আবার খারাপ দিকটাও রয়েছে। এখানে গাড়ীতে একজন ভালো ও খারাপ চালক থাকতে পারে। তবে যে খারাপ চালক সে দুর্ঘটনায় ঘটায়। কিন্ত গাড়ী চালাচ্ছে। কাজেই সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকসহ যেসব মিডিয়া রয়েছে সেখানে ভাল ও খারাপ দিক রয়েছে। তবে কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ পরিচালনা করা দায়িত্ব নিজেদের উপর। তিনি আরো বলেন, জ্ঞানই শক্তি। আজকে বিদ্যান ব্যক্তিরা উপযুক্ত করে জাতীয় পাঠ্যপুস্তকের কারিকুল্যাম রচনা করেছেন। তাই পাঠ্যপুস্তকের পড়া মনেও রাখতে হবে আবার মেনেও নিতে হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.