রাঙামাটির জুরাছড়িতে সেটেলার বাঙালী কর্তৃক এক পাহাড়ীর ভুমি বেদখলের চেষ্টা ও প্রতিবাদকারীদের মারধরের প্রতিবাদে বুধবার বিক্ষোভ-মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন।
পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটি সরকারী কলেজ শাখার যৌথ উদ্যােগে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন পিসিপির জেলা শাখার সভাপতি জিকো চাকমা। পিসিপির সরকারী কলেজ শাখার সভাপতি সুনীতি চাকমার সভাপতিত্বে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্যে দেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কলেজ শাখার কলেজ শাখার সভাপতি সোনারিতা চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক চারুলতা তংচংগ্যা, পিসিপির কলেজ শাখার সহ-সভাপতি রাসেল চাকমা, শিক্ষার্থী মেরিন বিকাশ ত্রিপুরা প্রমুখ। এর আগে একটি বিক্ষোভ-মিছিল কলেজ প্রাঙ্গন থেকে শুরু করে কলেজ ভবনের চার দিকে প্রদক্ষিণ করে কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন,পার্বত্য চুক্তির চুক্তি ২৬ বছর অতিবাহিত হলেও চুক্তির র্পূনাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি। চুক্তি বাস্তবায়িত না হওয়ায় এখানে জুম্ম নারী থেকে কারোরই নিরাপত্তা নেই। এক নিরাপত্তাহীন জীবনের মধ্য দিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত জুম্মদের ভুমি বেদখলের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি মোটেই সুখকর নয়, এক শ্বাসদ্ধকর অবস্থায় বিরাজ করছে। এখানে নিরাপত্তা ও উন্নয়নের নামে যদি আইন-শৃংখলা বাহিনী বন্দুকের নলের ভয় দেখিয়ে পাহাড়ীদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাই তাহলে একদিন ছাত্র সমাজ তার প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। আতœনিয়নাধিকার ও ভুমি আধিকারের জন্য সত্তর দশকে যেভাবে শান্তি বাহিনী গঠন করে সশস্ত্র সংগ্রাম করেছিল, যদি সেরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয় তাহলে ছাত্র সমাজ শান্তি বাহিনীর পথ অবলম্বন করতে বাধ্য হবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন ছাত্র নেতারা। বক্তারা অবিলম্বে পার্বত্য চুক্তির পুর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষে গঠিত পার্বত্য ভুমি কমিশনকে কাযর্কর, জুরাছড়িতে এক পাহাড়ীর ভুমি বেদখলের চেষ্টা ও মারধরকারীদের শাস্তির দাবি জানান।
স্বাগত বক্তব্যে হিল উইমেন্স ফেডারেশন কলেজ শাখার সভাপতি সোনারিতা চাকমা বলেন, নতুন বছর শুরু হতে না হতে জুম্মদের ওপর বিভিন্ন অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন দেখা যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে জুম্মদের নিরাপত্তা কোথাও থাকবে না। জুম্মরা আওয়ামী লীগ বিএনপি করেও রেহাই পাচ্ছে না। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের অবস্থা বিরাজমান থাকবে।
সভাপতি বক্তব্য সুনীতি বিকাশ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতা শুধু জুরাছড়িতে ১৩ জানুয়ারির ঘটনা না, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রতিটি জায়গায় এরকম ঘটনা ঘটেই থাকে। আমরা আশা করেছিলাম ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে স্বাধীন, স্বার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি সেই স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্রে আমরা স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে পারবো। জুম্ম জনগণ সংখ্যায় কম হতে পারে কিন্তু জ্ঞান গড়িমায় এ জুম্ম জনগণ ৭০ দশকের ন্যায় প্রতিরোধের ঝড় তুলবে।
পিসিপির জেলা শাখা সভাপতি জিকো চাকমা বলেন, একদিকে উন্নয়ন নামে ভূমি বেদখল অন্যদিকে সেটেলার কর্তৃক জুম্মদের ভূমি বেদখলের নজির পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত চলমান রয়েছে। তিনি ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন কার্যকর করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.