খাগড়াছড়ির পানছড়িতে ৪ নেতাকর্মী নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে ইউপিডিএফ বিক্ষোভ,হরতাল, সড়ক অবরোধ ও বাজার বয়কটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে আগামী ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর প্রতিবাদ সমাবেশ ও শোক সভা, বিভিন্ন স্থানে কালো পতাকা উত্তোলন। ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত পানছড়ি বাজার বয়কট। ১৭ ডিসেম্বর পানছড়ি উপজেলাব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট ও ১৮ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি জেলাব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ।
মঙ্গলবার ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান নিরন চাকমার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কর্মসূচির কথা বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়,সোমবার পিসিপি’র সাবেক সভাপতি ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা,পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুনীল ত্রিপুরা , গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সভাপতি লিটন চাকমা ও ইউপিডিএফ সংগঠক রহিন বিকাশ ত্রিপুরা, নীতি দত্ত চাকমা ও হরিকমল ত্রিপুরাসহ ৭ জন নেতাকর্মী যুব সম্মেলন সফল করার জন্য লোগাঙ এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। মঙ্গলবার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সোমবার রাতে বিপুল চাকমাসহ উক্ত ৭ জন অনিল পাড়া নামক গ্রামে এক ব্যক্তির বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এ সময় রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা সময়ের মধ্যে পানছড়ি সদর এলাকা থেকে মদদপুষ্ট ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ দুর্বৃত্তদের একটি সশস্ত্র দল ওই বাড়িতে গিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় তাদেরকে গুলি করে হত্যা করে। ‘নিহতদের মধ্যে বিপুল চাকমা চেঙ্গী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের করল্যাছড়ি বুদ্ধধন পাড়ার সুনয়ন চাকমার ছেলে। সুনীল ত্রিপুরার বাড়ি মাটিরাঙ্গা উপজেলার বড়নাল ইউনিয়নের সুরেন্দ্র রোয়াজা হেডম্যান পাড়ায়। তার পিতার নাম সুখেন্দু বিকাশ ত্রিপুরা। লিটন চাকমার বাড়ি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের দ্রোনচার্য কার্বারি পাড়ায়, তার পিতার নাম মৃত. চিন্তা মুনি চাকমা। রুহিন বিকাশ ত্রিপুরা পানছড়ির উপল্টাছড়ি ইনিয়নের পদ্মিনী পাড়ার বাসিন্দা জনাধন ত্রিপুরার ছেলে।
ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে আরো দাবী করা হয়. চার জনকে হত্যার পর সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে ইউপিডিএফ সংগঠক নীতিদত্ত চাকমা, হরিকমল ত্রিপুরা ও সদস্য প্রকাশ ত্রিপুরাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাদেরকে এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, হরতাল, সড়ক অবরোধ ও বাজার বয়কটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ উক্ত হত্যাকাণ্ডকে জঘন্য, ন্যাক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত আখ্যায়িত করে বলা হয়, ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীগুলোর সন্ত্রাসী অপতৎপরতার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নেই তা এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আর একবার প্রমাণিত হলো। খুন, গুম করে জনগণের ন্যায্য আন্দোলন দমন করা যায় না। অতীতে অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করার পরও ইউপিডিএফকে আন্দোলন থেকে বিচ্যুত করা যায়নি, ভবিষ্যতেও যাবে না। বিবৃতিতে অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীগুলো ভেঙে দেয়ার দাবি জানানোর পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে অরাজকতা সৃষ্টিকারী এই ঠ্যাঙাড়ে খুনি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এলাকায় এলাকায় গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
-- প্রেস বিজ্ঞপ্তি।