ভারী বৃষ্টিপাতে রাঙামাটিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতি ঘটেছে। জেলার ৪টি উপজেলায় ২৯টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ বন্যায় কবলিত হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানায়, রাঙামাটি জেলায় ২৯টি ইউনিয়নে প্লাবিত হয়েছে। এতে ১৯৯টি গ্রামের দশ হাজার ৬১৭ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৩৯ হাজার ৬২৫ জন বন্যায় কবলিত হয়েছে। এতে ৬ হাজার ৫১৪টি ও ২৮টি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় অভ্যন্তরিন ৪১ সড়ক বন্ধ হয়েছে। ৩৬টি কালভার্ট কষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৮টি বাজার প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় ফসলি জমি ক্ষগ্রিস্ত হয়েছে ৩ হাজার ৩৬৮ হেক্টর। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পুকরের সংখ্যা ১৪১টি এবং আশ্রয় কেন্দ্র পশু হয়েছে ৯৬৫টি। এছাড়া বরকল ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় পানিতে ভেসে গিয়ে আট বছরের এক শিশুসহ ২ জন নিখোজ রয়েছে।
এদিকে, বাঘাইছড়ি উপজেলায় বন্যায় ৮টি ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে এক হাজার পরিবার। বন্যা দুর্গতদের উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি মারিশ্যা বিজিবির পক্ষ থেকে দুর্গতদের মাঝে এাণ, শুকনা খাবার ও খিচুরি বিতরণ করছে।
এছাড়া মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়কের কবাখালী এলাকায় মাইনী নদীর পানি বিপদ সীমার অতিক্রম করায় সড়ক ডুবে যাওয়ায় বন্ধ থাকায় সাজেক পর্যটনে দুই শত পর্যটক আটকে পড়েছেন। অন্যদিকো জুরাছড়ি উপজেলার চারটি ইউনিয়ন, বিলাইছড়ি একটি ইউনিয়ন ও বরকল উপজেলার কয়েকটি এলাকায় নি¤œ এলাকা প্লাবিত হয়ে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। এসব এলাকায় পাহাড়ী ঢলে বিভিন্ন নতুন নতুন স্থান প্লাবিত হচ্ছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার তথ্য ও প্রচার বিভাগের ত্রিদিপ চাকমার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বাঘাইছড়ি উপজেলায় বন্যায় দুর্গত ১৫ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়ে চরমভাবে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ তাদের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস দোকানপাট, রোপিত আমন ধান, বাগান-বাগিচা ও গবাদিপশুসহ ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিবৃতিতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়,পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ,সাংসদ সদস্য, রাঙামাটি জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসককে দ্রæত ত্রাণ বিতরণের দাবী জাননো হয়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন,মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়কের পানি উঠায় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সাজেক পর্যটনে দুই শত পর্যটক আটকে পড়েছেন। তবে বুধবার অনেকে মোটর সাইকেলযোগে চলে যাচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন ও প্লাবিত স্থানের দুর্গতদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসছেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.