এরোমা দত্ত এমপি বলেন, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ করে সমতলের আদিবাসীরা অনেক অবদান রেখেছেন। আদিবাসীদের কথা তুলে ধরার জন্য প্রশাসনে আদিবাসী নারীদের থাকা অনেক জরুরি। আজকের সংলাপের উপর ভিত্তি করে আদিবাসী নারীদের জন্য একটি কর্ম পরিকল্পনা তৈরী ও বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন বিষয়ক নীতিপ্রণেতা, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন।
ড. নমিতা হালদার বলেন, যদি সম্ভব হয় তাহলে বিআইডব্লিউএন এর অঞ্চলভিত্তিক শাখা গঠন করে ভিকটিককে সহায়তা দেয়াসহ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এর যোগাযোগ বৃদ্ধি করা।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আদিবাসী নারীর স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছি। সে কারণে, আদিবাসীদের উপর নারীর সহিংসতা হ্রাস করার পদক্ষেপ হিসেবে পাশ্ববর্তী ভারতের নর্থ ইস্ট এ সরকার আদিবাসীদের জন্য যেমন আদিবাসী নারী কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে, বাংলাদেশ সরকারও আদিবাসী নারী কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে পারে। শুধু তাই না, আদিবাসী নারীর প্রতি পিতৃতান্ত্রিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন আনয়নে বৃহত্তর সমাজের নীতি প্রণেতা, মূল স্রোধারা নারী সংগঠনের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।
গোস্বামী বলেন, আদিবাসী নারীদের মানবাধিকার অবস্থা দেশের জন্য লজ্জাজনক অথচ প্রত্যেক আন্দোলনে আদিবাসী নারীদের ভূমিকা ছিল। টংক আন্দোলনে রাশিমনি, মুক্তিযুদ্ধে কাকন বিবিসহ অনেক আদিবাসী নারীর ভূমিকা ছিল। তাদের অবদানগুলো মূলধারার জাতিগোষ্ঠীসহ সকলকে জানতে এবং জানাতে হবে। প্রান্তিক আদিবাসী নারীরা প্রান্তিকতার কারণে বিভিন্ন ধরণে সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে । শেষে তিনি জেন্ডারভিত্তিক বাজেট ছাড়া আদিবাসী নারী উন্নয়নে কাজ করাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলেন, দুর্গম পাহাড়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছছে কিনা তা দৃষ্টি দেয়া খুব জরুরী।
জাইমা ইসলাম বলেন, সিসটেমেটিক ডিসক্রিমিনেশন এর কারণে আদিবাসী নারীরা প্রাধান্য পায় না। বাঙালি নারী বিচার পাওয়ার কারণ তাদের জাতিসত্ত্বা। মিডিয়ার সচেতনতার অভাবে আদিবাসী নারীরা কভারেজ পায়না এবং গণমাধ্যমে আদিবাসী নারীদের ভিসিভিলিটি কম। সেই সাথে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের সময় বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হন। ভিকটিমকে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ দেয়াসহ আপোষ করতে বাধ্য করা এবং বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে নেওয়ার প্রধান বৈরিতা।
কাপেং ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার, উজ্জ্বল আজিম বলেন, যুব সমাজের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ অধিকার আদায়ে সংঘবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়তে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে চঞ্চনা চাকমা আদিবাসী নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সকলের সহযোগীতা কামনা করে বলেন, আদিবাসীদের নারীদের অবস্থা শোচনীয়। দুনীতি, ভুমি দখল, ধর্মান্ত, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন- বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে বিচার পায় না। কোচ আদিবাসী নারী ধর্ষণ এর ঘটনায় দুই আসামী গ্রেফতার হলেও সুস্থ বিচার পাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
--প্রেস বিজ্ঞপ্তি।।