করোনায় দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া ইউনিয়নের দুর্গম এলাকা নারাইছড়ি গ্রামের মঙ্গলবার অসহায় ও কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তা দিয়েছে সিএইচটি কোভিড-১৯ ইমারজেন্সি এইড কমিটি ঢাকা।
জারুলছড়ির ধনপাতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়। খাদ্য সহায়তা বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিন পার্বত্য জেলার নারী সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির উপদেষ্ঠা খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজের অবসর প্রাপ্ত অধ্যাপক মধুমঙ্গল চাকমা, সুপ্রিম কোটের এডভোকেট নিকোলাস চাকমা, সংগঠনের সদস্য শক্তি নন্দ চাকমা, বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তোষ জীবন চাকমা প্রমুখ।
খাদ্য সহায়তা অনুষ্ঠানে নারাইছড়িবাসীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন রাঙাামাটির সরকারী কলেজের বিএসসি অনার্সের ছাত্র অনন্ত চাকমা। এ সময় তিনি বলেন স্বাধীনতা ৪৯ বছরের পর এই প্রথম এই কোন এমপি তাদের গ্রামে পা রাখলেন। স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর সরকারের প্রথম এমপি বাসন্তি চাকমাকে তাদের গ্রামে পেয়ে খুশী গ্রামবাসীরা। প্রথম এমপিকে কাছে পেয়ে গ্রামবাসীরা তাদের গ্রামের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানান।
খাদ্য সহায়তা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাসন্তি চাকমা বলেন এই দুর্যোগের দিনে সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা অসহায় ও কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই খাদ্য সহায়তা।
তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যাতে কোন লোককে না খেয়ে থাকতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য। তিনি আরো বলেন করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা পৃথিবীতে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর ইচ্ছায় সারা দেশের ৫০ লাখ কর্মহীন পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে দেয়া হচ্ছে। খাগড়াছড়িতে এমন ৬০ হাজার পরিবার নগদ অর্থ সহায়তা পাচ্ছেন। বাসন্তি চাকমা এমপি করোনাকালীন সময়ে সরকারের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ সকলের জন্য দোয়া প্রার্থনা করতে বলেন গ্রামবাসীদের।
এছাড়া তিনি দীঘিনালা বাবুছড়া ইউনিয়নের দুর্গম নারাইছড়ি এলাকা কোন এক সময় দেখতে যাবেন বলেন প্রতিশ্রুতি দেন নারী সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা।
বাবুছড়া দুর্গম নারাইছড়ির ১১ গ্রামের ১শ ৭০ পরিবারের মাঝে এ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়।
এদিকে দুপুরে পানছড়ি নালকাটা গ্রামে ও ১ শ ৪০ পরিবার অসহায় ও কর্মহীনদের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেন নারী সাংসদ বাসন্তি চাকমা। খাদ্য সহায়তার মধ্যে রয়েছে ১৩ কেজি চাউল, ১ লিটার সয়াবিন তেল, পেয়াজ ১ কেজি, লবন ১ কেজি,সিদোল(শুটকি) ১ কেজি, বাংলা সাবান ১ গোল্লা ও ১ ডজন দিয়াশিলাই ।
নালকাটা গ্রামে খাদ্য সহায়তা নিতে আসা পানছড়ি পোড়াবাড়ী মুসলিম পাড়া আজুফা খাতুন, আদি ত্রিপুরা পাড়া কালোতি ত্রিপুরা, আচাই মহাজন পাড়া চিং¤্ররো মারমা ও সুর্য মোহন কারবারী পাড়ার অসীম চাকমা বলেন এই দুর্যোগের দিনে এ খাদ্য সহায়তা পেয়ে তাদের অনেক উপকার হয়েছে এতে তারা অনেক খুশী। অনন্ত ৫/৬ টা দিনের খাদ্য হলেও তারা পেয়েছেন। তারা বলেন এখন খুবই অভাব কোন কাজ কর্ম নেই। টাকা আয় কারার মতো কোন সুযোগ নেই। তাই এই খদ্যা সহায়তা পেয়ে তারা খুশী ও আনন্দিত।
নালকাটা খাদ্য সহায়তা বিতরণের সময় নারী সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা বলেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য এলাকার মা। তাই পার্বত্য এলাকার মা তাকে তিন পার্বত্য জেলার দায়িত্ব দিয়েছেন এলাকার সকলের ভালো মন্দ দেখাশুনা জন্য। তিনি পার্বত্য এলাকার সকল সম্প্রদায়ের লোকদের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
এ সময় সিএইচটি কোভিড-১৯ ইমারজেন্সি এইড কমিটি ঢাকা এর সদস্য সুপ্রিম কোটের এডভোকেট নিকোলাস চাকমা বলেন তাদের এ খাদ্য সহায়তার করোনা ভাইরাসের কারনে অসহায় ও কর্মহীন সকল সম্প্রদাদের লোকদের জন্য অব্যবহত থাকবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.