রাঙামাটি সদর উপজেলায় উন্নত মাসিক স্বাস্থ্যবিধি চর্চা ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন বিষয়ক কর্মশালা বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
লেমনগ্রাস হল রুমে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা উইমেন্স এডুকেশন ফর এডভান্সমেন্ট এন্ড এমপাওয়ারমেন্ট(উইভ) এর বাস্তবায়নে ও আরএসএফ সোসিয়েল ফাইনান্স এর সহযোগিতায় কর্মশালার প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আসমা। উইভ এর নির্বাহী কমিটির সদস্য রিতা চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভিন, জাতীয় মানবধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান। অনুষ্ঠানে রাঙামাটি সদর উপজেলার প্রকল্পের নারী ও কিশোরী অংশ নেন। অনুষ্ঠানে পাহাড়ে কলা গাছের শুকনা পাতা থেকে মাশরুম ও আঁশ দিয়ে স্যানিটারি প্যাড তৈরী প্রকল্পের উদ্বোধন। পরে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে প্রকল্পের কিশোরী ক্লাবের সদস্যদের মাঝে চেক বিতরণ করা হয়।
কর্মশালার শুরুতে প্রকল্প সমন্বয়কারী শুভম চাকমা প্রকল্প সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে পাহাড়ে নারী ও কিশোরীদের পরিবেশ বান্ধব কলা গাছের আঁশ দিয়ে তৈরি পুনঃব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করে মাসিকের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করে প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নতি করা। এছাড়া কৃষকদের কলার শুকনো পাতা থেকে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দিয়ে অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের দরিদ্র মানুষেরা কম দামে মাশরুমের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা। তিনি আরো জানান,কলার ফাইবার রাসায়নিকমুক্ত, অ-বিষাক্ত এবং গন্ধমুক্ত। কলার ফাইবারের প্রাকৃতিক কুল্যান্ট এবং ঔষধি বৈশিষ্ট্য এটির ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্যে সহায়তা করে এবং ক্ষতিকারক রাসায়নিক এবং রঙ ব্যবহার করা হয় না বলে এটি ১০০ শতাংশ নিরাপদ। এছাড়া এ স্যানিটারি প্যাডগুলো স্বাস্থ্যকর, সুতির কাপড় ব্যবহার করে তৈরি করা হয় বলে পাঁচ বছর পর্যন্ত পুনরায় ব্যবহার করা যায়। উপজেলার ছয়টি উচ্চ বিদ্যালয়ের মেয়েরা যাদের স্যানিটারি প্যাড কিনতে সক্ষম নয় তাদের মধ্যে পাঁচশত ছাত্রীদের মাঝে সংরক্ষণ এবং সস্তায় পুনরায় ব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি প্যাড সরবরাহ করা হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে কলা চাষের সাথে জড়িত পাঁচশত কৃষকদের এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আসমা বলেন, এলাকার নারী-কিশোরীদের পরিবেশ বান্ধব কলা গাছের আঁশ দিয়ে তৈরি পুনঃব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি প্যাড তৈরী ও কলা গাছের আঁশ দিয়ে মাশরুম চাষ প্রকল্প হাতে নেওয়া উদ্যোগটি এলাকার মানুষষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। অন্যদিকে পরিবেশেও ভাল অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকাংশই মানুষ দারিদ্রসীমার মধ্য দিয়ে বসবাস করে। তাদের অনেকের ক্রয়ের ক্ষমতা থাকে না। তাই কম দামে পরিবেশ বান্ধব কলা গাছের আঁশ দিয়ে তৈরি পুনঃব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি প্যাড তৈরী হলে অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয় হবে। এছাড়া কলা গাছের পাতা দিয়ে মাশরুম চাষ করা হলেও মানুষের ক্রয়ের নাগালে আসবে। এজন্য মানুষের মাঝে কলা গাছ লাগানোর একটা প্রবণতা দেখা দেবে। যে জায়গাগুলোতে খালি রয়েছে সেখানে প্রচুর কলা গাছ লাগানো হলে কলার উৎপাদন হবে। কারণ কলার মধ্যে প্রচুর আয়ন রয়েছে। এতে নারী-পুরুষ ও শিশুদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.