বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে রাঙামাটিতে এক টানা ভারী বৃষ্টিপাতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে শহরের পুরাতন বাস ষ্ট্যন্ডে এলাকা, চম্পক নগর, লোকনাথ আশ্রম ও ভেদভেদীসহ আশেপাশে কিছু এলাকায় ছোটখাটো দেয়াল ও পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি।
রোববার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হলেও রাত থেকে একটানা ভারী বর্ষণে জনজীবন থমকে যায়। শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। টানা বৃষ্টিতে রাঙামাটি শহরের পুরাতন বাস ষ্ট্যন্ডে এলাকা, চম্পক নগর, লোকনাথ আশ্রম ও ভেদভেদীসহ আশেপাশে কিছু এলাকায় ছোটখাটো দেয়াল ও পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। ফলে ঘরবাড়ির উপর দেয়াল চাপা পড়লেও হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি।
রাঙামাটি আবাহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গেল ২৪ ঘন্টায় রাঙামাটিতে ২৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় রাঙামটি জেলা প্রশাসন উপদ্রুত এলাকাগুলোতে ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধারকর্মীদের পাঠিয়ে লোকজনকে বাড়ি ঘর থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। এছাড়া রাঙামাটি চট্টগ্রাম সড়কের ছোটখাটো কিছুপাহাড় ধ্বসের সৃষ্টি হলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মীরা সড়ক থেকে মাটি অপসারণ করে নেয়।
এদিকে, রাঙামাটি চট্টগ্রাম, রাঙামাটি খাগড়াছড়ি সড়কের একাধিক স্থানে সড়কের উপর পাহাড় ধস হওয়ায় ব্যহত হচ্ছে যান চলাচল। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের বেতবুনিয়ার ঠান্ডাছড়ি এলাকার ভারী বর্ষণে পাহাড়ী ঢলের পানির তোড়ে রাস্তা ডুবে যাওয়ায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যানবাহন চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকে। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢল নেমে আসায় রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়তে শুরু করেছে।
এদিকে প্রাণহানী রোধ করার জন্য সোমবার দিনভর পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যেতে শহর জুড়ে মাইকিং করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।
এছাড়াও জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশীদ সোমবার নিজে ঝুকিপূর্ণ এলাকায় গিয়ে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ করেছেন।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী আবু মুছা বলেন, সড়কের উপর মাটি পড়ার সাথে সাথে সওজের শ্রমিকরা তা সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করছে। তিনি বলেন বৃষ্টির কারণে মাটি নরম হওয়ায় সড়কগুলো ঝুকিপুর্ণ হয়েছে। কোথাও সড়ক ধারক দেওয়াল ধসে পড়েছে।
রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার জানান, বৃষ্টির কারণে মাটি নরম হয়ে বিদ্যুৎ লাইনের উপর গাছ উপড়ে পড়ছে। এতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যহত হচ্ছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশীদ জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন বেশ সতর্ক আছে। গত বছরের ন্যায় এবার যেন একটিও যেন প্রাণহানী না হয় এবং ক্ষয়ক্ষতি সহনীয় পর্যায়ে রাখা যায় সেজন্য প্রশাসনের সকল কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। দুর্গতদের জন্য গত বছর আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা ২০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এগুলো এছাড়া রূপনগরে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্গতরা দ্রুত এখানে এসে আশ্রয় নিবে।
উল্লেখ্য, গেল বছর ১৩ জুন টানা বৃষ্টির কারণে একাধিক স্থানে পাহাড় ধসের কারণে রাঙামাটিতে ১২০ জনের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.