ভয়াবহ পাহাড় ধস আর অতি বর্ষণের কারনে ২০১৭ সাল ছিল পার্বত্য রাঙামাটির বাসিন্দাদের জন্য দুর্বিসহ বছর। বছরের মাঝামাঝি জুন মাসের শুরুতে রাঙামাটিতে সর্বোচ্ছ রেকর্ড মাত্রায় বৃষ্টি আর ভয়াবহ পাহাড় ধস জান মালের ব্যাপক ক্ষতি করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাঙামাটির পরিস্থিতি দূর্বিসহ বিভিষিকাময় হয়ে উঠে। বিশ্ব জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল রাঙামাটি।
৩০ মে ঘুনিঝড় মোরার তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় রাঙামাটি স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। প্রাণ হারায় দুইজন। ১৩ জুন ঘটে যায় রাঙামাটির ইতিহাসের স্মরণকালে ভয়াবহ পাহাড় ধ্বসের ঘটনা। ১৩ জুনের ভয়াবহ পাহাড় ধ্বসে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু ও সম্পদের ক্ষতি হয় রাঙামাটিতে। পাহাড় ধ্বসের ঘটনায় ৬ সেনা সদস্যসহ মারা যায় ১২০ জন। আর আহত হয়েছে দেড় হাজারেরও বেশী। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে প্রায় আড়াই হাজারের মতো। বিভিন্ন স্থানে সড়কের উপর পাহাড় ধনে পড়ে। মানিকছড়ি শালবনে ১০০ মিটার সড়কের অংশ নিশ্চিন্ন হয়ে বিছিন্ন হয়ে যায় রাঙ্গামাটি - চট্টগ্রাম সহ অভ্যন্তরীন সব সড়ক যোগাযোগ।
গাছপালা উপড়ে ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে লন্ডভন্ড হয়ে যায় রাঙামাটি -হাটহাজারী বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। পুরো শহর বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে পড়ে, বন্ধ হয়ে যায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা। দেখা দেয় চরম মানবিক সংকট। রাঙামাটি শহরের অভ্যন্তরীন সড়ক ও বিভিন্ন স্থানে মাটি ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় সড়কে যান চলাচলে বিঘœ ঘটে। সরকারী ও আবসিক অনেক পাকা ভবন ঝুকিঁপূর্ন হয়ে উঠে।
পাহাড় ধ্বসের ৪দিনের মাথায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পূনরায় চালু হয় এবং রাঙামাটি চট্টগ্রাম সড়কের ৮ দিন সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন থাকার পর সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে মানিকছড়ি শালবন এলাকায় বিকল্প সড়ক চালু করে যোগাযোগ পূর্ণস্থাপিত হয়। একমাস বিচ্ছিন্ন থাকার পর সরাসরি চালু হয় খাগড়াছড়ি –রাঙামাটি সড়ক। এর পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসে রাঙামাটির জীবনযাত্রা।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.