ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ রাঙামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কে অবশেষে ১মাস ৩দিন পর রোববার বিকাল থেকে হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।
রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, গেল ১৩ জুন প্রবল বর্ষনে পাহাড় ধসের ঘটনার জেলার অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপর্ণ সড়ক রাঙামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি রুটের কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫টি স্থানে ভেঙ্গে যায়। এর মধ্যে মানিকছড়ির ৬কিলোমিটার এলাকায় পর সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার জুড়ে পাহাড়ের মাটি গাছ পড়ে রাস্তা ব্লক ও দুটি স্থানে সড়ক ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘ ১মাস ৩ দিন পর রোববার বিকালে রাঙামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কের কতুকছড়ি ইউনিয়নের সাপছড়ি হিজিং পাড়া এলাকায় ভেঙ্গে যাওয়া সড়ক মেরামত সম্পন্ন করার পর হালকা যানবাহনের জন্য খুলে দেয়া হয়। সড়ক চলাচলের উদ্ধোধন করেন আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। এসময় রাঙামাটির সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু মুছা,রাঙামাটি পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ সোলেয়মান,সাধারন সম্পাদক মনসুর আহম্মেদসহ আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ।
এসময় সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের পর আড়াই দিনের মধ্যে বিদ্যূৎ ব্যবস্থা এবং ৮ দিনের মাথায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে যানবাহন চালু করা সম্ভব হয়েছে। প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতায় রাঙামাটি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠতে শুরু করেছে। আজকে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু করা হয়েছে।
রাঙামাটি সড়ক ও জনপথের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু মুছা জানান, সড়ক ও জনপথের লোকজন দীর্ঘ দিন পরিশ্রমের ভেঙ্গে যাওয়া রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের মেরামত সম্পন্ন করেছে। এখন থেকে হালকা যানবাহন চলাচল করতে পারবে এবং কিছু দিন পর বাসসহ ভারী যানবাহন করতে পারবে।
এদিকে, পাহাড় ধসের ১মাস ৩ দিন পর রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে যান চলাচলে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন এবং ওই রুটে চলাচলকারী যাত্রী-চালকরা। তবে অনেকেই আশংকা প্রকাশ করেছেন হিজিং পাড়া এলাকায় ভেঙ্গে যাওয়া সড়কের অংশে ভারী বৃষ্টিপাত হলে আবারো যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ শুধুমাত্র বুলডোজার দিয়ে মাটি ভরাট করে রাস্তার সংযোগ দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে, রোববার জেলা প্রশাসন সন্মেলন কক্ষে বিশেষ জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহামম্মদ মানজারুল মান্নান। এসময় প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন। সভা সূত্রে জানা গেছে,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) প্রকাশ কান্তি চৌধুরীকে আহ্বায়ত করে ক্ষতিগ্রস্থদের নিরাপদ স্থান কমিটিতে গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি ক্ষতিগ্রস্থদের নিরাপদ স্থান নির্ধারণসহ জায়গাজমি যাছাই-বাছাই করবে। অপর কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) আবু শাহেদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে পূর্নবাসন বিষয়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ দুটি দশ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
উল্লেখ্য,গেল ১৩ জুন ভারী বর্ষনে পাহাড় ধসে রাঙামাটি সদর,জুরাছড়ি,কাপ্তাই,কাউখালী ও বিলাইছড়ি এলাকায় দুই সেনা কর্মকর্তা ও তিন সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের মৃত্যূ হয়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.