মাহবুবুর রহমান ছিলেন একজন সৎ নিষ্ঠাবান ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রকৃতির মানুষ। তিনি সমাজে অসাম্প্রদায়িক চেতানার প্রদীপ জ্বালাতে জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাজ করে গেছেন। তার এই স্মরণসভায় সকলের এই অঙ্গিকার হয়ে উঠুক দীর্ঘদিনের যে লালিত স্বপ্ন একটি অসাম্প্রদায়িক পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাওয়া।
শুক্রবার রাঙামাটি পাবলিক কলেজ মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ ও সমাজ সেবক মাহবুবুর রহমানের নাগরিক শোক সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
মাহবুবুর রহমান স্মরণে নাগরিক শোক সভার প্রস্তুতি পরিষদের আয়োজনে স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, জেলা প্রশাসক মোঃ সামসুল আরেফিন, পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ, প্রাক্তন উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান, স্থানীয় সরকার পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান গৌতম দেওয়ান,পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কাজী নজরুল ইসলাম, তবলছড়ি বাজার কল্যাণ সমিতির সভাপতি জহির আহম্মদ সওদাগর, জাতীয় পাটি রাঙামাটি সভাপতি হারুন মাতব্বর, কমিউনিষ্ট পার্টি রাঙামাটির সভাপতি কমরেড সমীর কান্তি দে, জেলা পরিষদ সদস্য হাজী মুছা মাতব্বর, রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিটজ এর সহ-সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ, রোভার স্কাউটেসের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার, রাঙামাটি প্রেসক্লাব সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, প্রয়াত মাহবুবুর রহমানের বড় ছেলে মেহেদী আল মাহবুব প্রমুখ।
শোক সভায় শোকপত্র পাঠ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অঞ্জুলিকা খীসা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও মাহবুবুর রহমান স্মরণে নাগরিক শোকসভা প্রস্তুতি পরিষদের সদস্য সচিব প্রবীন সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে।
অনুষ্ঠানে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ বেতারের ঘোষিকা শিখা ত্রিপুরা ও সাংস্কৃতিক কর্মী সৈকত রঞ্জন বাবু।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রয়াত মাহবুবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে বক্তারা বলেন, মাহবুবুর রহমান ছিলেন একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যুদ্ধ করেও তার কৃতিত্বস্বরূপ মুক্তিযোদ্ধার সনদ গ্রহণ করেননি। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কখনোই তার কৃতিত্বের কথা কাগজে কলমে দাখিল করে বলেন না।
বক্তারা আরো বলেন, মাহবুবুর রহমান ছিলেন একজন অতি সাধারণ মানুষ। অস্ত্র কাঁধে নিয়ে যুদ্ধ করেও তিনি তার সনদ গ্রহণ করেননি। তার সনদ গ্রহণ করার জন্য আমরা তাকে অনেকবার বলেছি। তিনি প্রতিউত্তরে আমাদেরকে বলেছেন আমি যুদ্ধ করেছি দেশের জন্য সনদ পত্র গ্রহণ করে সাহায্য গ্রহণের জন্য নয়।
বক্তারা বলেন,মাহবুবুর রহমান ছিলেন পার্বত্য রাঙামাটির জন্য একজন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ। তিনি সমাজের প্রতিটি সেক্টরে তার হাতের ছোঁয়া রেখে গেছে। তার হাত ধরে পার্বত্য রাঙামাটিতে অনেক উন্নয়ন মুখী সংগঠন সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সংগঠন তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সহযোগিতা করে গেছেন। তার এই অবদানের কথা পার্বত্যবাসী চিরদিন স্মরণ রাখবে। তিনি পরবাসী হলেও পার্বত্যবাসীর হৃদয়ে বেঁচে থাকবে তার কর্মকান্ডের মাধ্যমে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.