বান্দরবানের দুর্গম থানচি উপজেলার তিন্দু ও রেমাক্রি ইউনিয়নে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এতে খাদ্যভাবে অনাহারে থাকায় অনেকেই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন।
একাধিক সূত্রে জানা যায়,বান্দরবানের দুর্গম থানচি উপজেলার তিন্দু ও রেমাক্রি ইউনিয়নে দুই ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার ৫শ পরিবারের তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলার রেমাক্রি ও তিন্দু ইউনিয়নের ৯৫ শতাংশ পরিবার জুম চাষের ওপর নির্ভরশীল। গত বছর জুমে (পাহাড়ে বিশেষ কায়দায় চাষ) আগুন (পাহাড়ে জঙ্গল কেটে, আগাছা পরিষ্কার করতে) দেওয়ার সময় বৃষ্টি হয়। যার কারণে জঙ্গল বা আগাছা আগুনে পুড়ে গিয়ে ছাই হয়নি। ওই অবস্থায় জুমে ধান রোপণ করেন জুম চাষিরা। অতি বৃষ্টিতে আগাছা বড় হওয়ায় ধান উৎপাদন ভালো হয়নি। যা হয়েছে তাও পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়েছে। যার কারণে জুমিয়ারা ঘরের গোলায় ধান জমা রাখতে পারেননি। এতে গত দুই মাস আগে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দেয়। অনাহারে বর্তমানে অনেকে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রগুলোর দাবী।
এদিকে,খাদ্য সংকট নিরসনে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে দুই ইউনিয়নে ১৬ টন চাল পাঠানো হয়েছে। তবে বিতরণ করা চাল চাহিদার তুলনায় অতি সামান্য বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
বড় মাদকের ভেতর পাড়ার মাসংচিং মার্মা জানান,গত বছর অতি বৃষ্টি ও পোকার আক্রমণে জুমে ফলন ভালো ফলন পাওয়া যায়নি। তাই যেটুকু চাল ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। এ দুই ইউনিয়নের প্রায় দেড় হাজার পরিবার খাবার সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছে। পাহাড়ি আলু (পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এক ধরনের আলু) খেয়ে বেঁচে আছে এই পাহাড়ি পরিবারগুলো।
রেমাক্রি ইউপি চেয়ারম্যান মুশৈথুয়াই মার্মা জানান, তার ইউনিয়নে এক হাজার ৩২০টি পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে ৯শ পরিবারের খাদ্য সংকট চলছে। ঘরে নতুন ধান উঠলে খাদ্য সংকট কিছুটা কমবে।
তিন্দু ইউপি চেয়ারম্যান মং প্রু অং মার্মা জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় ৬শ পরিবার খাদ্যের অভাবে দিনযাপন করছে। ঠিক সময়ে সহযোগিতা পৌঁছানো না গেলে খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।
জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানিয়েছেন, দুই ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.