আদিবাসী নেতৃবৃন্দ বলেছেন,সরকার তিন পার্বত্য জেলায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলোতে প্রয়োজনীয় শিক্ষক ও অবকাঠামো উন্নয়ন না করে নতুন সংকট সৃষ্টি করতে এবং আদিবাসীদের জাতিগত নির্মূলীকরণের হাতিয়ার হিসেবে রাঙামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপনের ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। এমনকি সরকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপনের ক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, জেলা পরিষদসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের কোন মতামত গ্রহন করেনি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনে নৈতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং স্থানীয় জনসাধারন তা গ্রহন করেনি।
নেতৃবৃন্দ ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সম্পাদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়িত না হওয়া পর্ষন্ত রাঙামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপন স্থগিতের দাবী জানান।
শনিবার রাঙামাটির আশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র সন্মেলন কক্ষে রাঙামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপন সংক্রান্ত বিষয়ে যুব সমাজের সাথে মতবিনিময়ে আদিবাসী নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেছেন।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্যাঞ্চল শাখা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির উদোগে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান। আদিবাসী ফোরাম পার্বত্যাঞ্চল শাখার সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে প্যানেল আলোচক ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রচার বিভাগের সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমা ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর মংসানু চৌধুরী। মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা। সভায় আদিবাসী যুব সমাজের বিভিন্নস্তরের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
আদিবাসী নেতা শক্তিপদ ত্রিপুরা ৫ পৃষ্ঠার মূল প্রবন্ধে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজ স্থাপনসহ সকল উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম সংক্রান্ত আইন প্রনয়নের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য জেলা পরিষদ ও প্রথাগত নেতৃত্বের সাথে আলোচনা ও পরামর্শ গ্রহন, পাহাড়ী ছাত্র-ছাত্রী তথা পাহাড়ী জনগণ যাতে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপনের সুফল পেতে পারে সেজন্য এই দুটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপনের সকল প্রকার কার্যক্রম স্থগিত রাখা, পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ীত্বশীল উন্নয়ন শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার লক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সম্পুর্নরুপে বাস্তবায়ন করা।
প্রবন্ধের শেষের দিকে বলা হয় সরকার যদি আদিবাসী পাহাড়ীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং গণতান্ত্রিক মুল্যবোধকে ভুলুণ্ঠিত করে জোর করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে চায় সে ক্ষেত্রে জুম্ম জনগনের পক্ষ থেকে যে কোন মূল্যর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.