রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা: রোমেল চাকমার উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ ও হামলার জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) রাঙামাটি জেলা শাখা।
বিএমএ রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি(ভারপ্রাপ্ত) ডা. উদয় শংকর দেওয়ান ও সাধারণ সম্পাদক ডা. সুইমিপ্রু রোয়াজার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,গেল ২৮ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে শহরের টিএন্ডটি রায় বাহাদুর সড়ক এলাকায় ডা: রমেল চাকমাকে আকস্মিকভাবে হামলার শিকার হয়ে গুরুত্বর আহত হন। তিনি আহত হয়ে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।
বিজ্ঞপ্তিতে,হামলার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবী জানানো হয়েছে।
এদিকে সোমবার চাকমা রাজ দরবারে এক সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সালিশে সভাপতিত্ব করেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায়। এ সময় তাকে সহযোগিতা করেন বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী নিরূপা দেওয়ান, টুকু তালুকদার ও রাঙামাটি পৌর কাউন্সিলর কালায়ন চাকমা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বসুমিত্র চাকমা, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে অর্থোপেডিক বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন ডা. আশীষ কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, ডা. শুভ্রসোম চাকমা, রাঙামাটির সিনিয়র সাংবাদিক সত্রং চাকমাসহ রাঙামাটির সুশীল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিরা।
সালিশে উভয় পক্ষের কথা শুনেন চাকমা রাজা ও তার সহযোগীরা। পরে সালিশের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এ ঘটনার জন্য এ ক্ষমা চান রায় বাহাদুর সড়কের বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা রায় তার মেয়ে আনুশা চৌধুরী, প্রিসলি চৌধুরী, প্রিসলির জামাই মো. আহাদ।
সালিশে চাকমা রাজা সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, রোমেলের বিরুদ্ধে করা রাঙামাটি কতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরী(জিডি) অতি দ্রুত প্রত্যাহার করবেন শর্মিষ্ঠার পরিবার। শর্মিষ্ঠা রায়ের পরিবার ক্ষমা প্রাথর্ণা করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনী আশ্রয় নেবেন না রোমেল চাকমা। তবে হামলার সাথে জড়িত এক অজ্ঞাত যুবক অতিদ্রুত ক্ষমা না চাইলে উপযুক্ত প্রমাণের সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে চাইলে আইনী প্রতিকার চাইতে পারবেন ডা: রুমেল চাকমা।
এসময় রোমেল চাকমা বলেন, তিনি চেয়েছেন তার উপর হামলা করেছে তার কাছে সরি বলুক। এর চেয়ে বেশী কিছু চাননি। তবে তার উপর হামলার ঘটনায় ক্ষমা চাওয়া ব্যাক্তিরা ছাড়াও আরো এক যুবক জড়িত ছিলেন। যে প্রথম তাকে হামলা করেছেন। কিন্তু তিনি যুবক সালিশে উপস্থিত ছিলেন না। কারনল ওই যুবক তাকে বেশী আঘাতটা করেছেন।
রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ আলী বলেন, রোমেল চাকমা একজন সম্মানিত লোক। বিষয়টি পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিয়েছে। বিষয়টি যদি সামাজিকভাবে সমাধান হয় তাহলে ভালো হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ জাহেদুল ইসলাম বলেন, উভয় পক্ষ তার কাছে এসেছিলেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করা যায় কিনা চাকমা রাজার পরামর্শ চেয়েছি। উভয় পক্ষ চাকমা রাজার কাছে গিয়েছেন। চাকমা রাজার রায়ে সন্তুষ্ট না হলে ভিক্টিম তার কাছে আসলে পুলিশ আইনী সহায়তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে আমরা চাই এটি সামাজিকভাবেই সমাধান হোক।
উল্লেখ্য, গেল ২৮ ডিসেম্বর চেম্বার শেষ করে শরীর চর্চার জন্য রায় বাহাদুর সড়কে সাইক্লিং এ বের হন। এ সময় একটি মাইক্রোবাস ওভার করে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে প্রতিবাদ করতে গেলে গাড়িতে থাকা লোকজন গাড়ি থেকে নেমে তাকে মারধর করে। তিনি আহত অবস্থায় জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে এ ঘটনায় আনুশা চৌধুরী রাঙামাটি কতোয়ালী থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.