টানা ভারী বর্ষনে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কলা বাগানের মালি কলোনী এলাকায় পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে এক শিশুসহ ২জন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছে। সোমবার দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে টানা বর্ষনের কারণে পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপুর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোমবার সন্ধ্যা থেকে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ঝুকিপূর্ন এলাকার বসবাসকারীদের উচ্ছেদ অভিষান শুরু করেছে এবং লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, টানা ভারী বর্ষনে সোমবার দুপুরের দিকে কাপ্তাই উপজেলার কলা বাগানের মালি কলোনী এলাকায় পাহাড় ধসে ঘটনা ঘটে। এতে মাটি চাপা পড়ে ৩ বছরের শিশু সূর্ষ্য মল্লিক ও একই এলাকয় তাহমিনা বেগম নিহত হয়েছেন। এসময় আব্দুল গফুর ও সুনীল মল্লিক নামের দুজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ও স্থানীয় লোকজন নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে। আহতদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসার আহমেদ রাসেল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাটি চাপা পড়ে এক শিশুসহ ২ জন নিহত হয়েছে ও ২ জন আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, টানা বর্ষনের কারণে রাঙামাটি শহরের কয়েকটি এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপুর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে মাইকিং করা হলেও এখনো তারা আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি। রাঙামাটি শহরে ২১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাছাড়া ঝুকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে বেশ কয়েকটি মোবাইল টিমসহ স্থানীয় সমাজ উন্নয়ন কমিটি পৌর কাউন্সিলারদের তত্ত্বাবধানে এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যেতে বার বার অনুরোধ করছে। তারপরও লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন না।
অপরদিকে টানা বর্ষনের কারণে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের জীবন ঝুকিপূর্ন হওয়ায় গতকাল থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুকিপূর্ন এলাকায় বসবাসরত বাড়ীর ঘরে উচ্ছেদ অভিষান শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে শিমুতলী, রুপনগরসহ কয়েকটি এলাকায় ঝুকিপূর্ন অবস্থায় বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা লোকজনদের জেলা প্রশাসনের খোলা আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ,কে,এম মামুনুর রশিদ জানান, জেলায় দুর্যোগ মোকাবেলায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসন সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। ইতোমধ্যে পাহাড় ধস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য লিফলেট বিতরণসহ লোকজনদের সচেতনা সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, টানা বর্ষনের কারণে পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপুর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের জন্য ২১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া সোমবার থেকে ঝুঁকিপুর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের উচ্ছেদ অভিষান শুরু করা হয়েছে এবং লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ২০১৭ সালের ১৩ জুন ভয়াবহ পাহাড় ধসে কারণে দুই সেনা কর্মকর্তা ও ৩ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের প্রানহানী ঘটে। এছাড়া বিদ্যুৎ ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নসহ বিপুল পরিমানের ঘরবাড়ি ও মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.