কাপ্তাই উপজেলার পাহাড়ী এলাকায় এবার দেশীয় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশীয় লিচুর পাশাপাশি অনেকে চায়ন-৩ নামের লিচুর চাষ করে ভাল ফলন পেয়েছেন। ফলে স্থানীয় বাজারগুলোতে লিচুতে সয়লাব হয়ে গেছে। এক শ্রেণীর বেপারীদের কারনে ফলন বেশী হওয়া সত্বেও সাধারণ মানুষকে বেশী দাম দিয়ে লিচু কিনে খেতে হচ্ছে। এ বছর একেকজন লিচু চাষী তিন লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৫ লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবে বলে কয়েকজন লিচু চাষী জানান।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ী পতিত জমিতে বছরের পর বছর ধরে সুমিষ্ট দেশীয় লিচুর চাষ করা হচ্ছে। একেকটি লিচু গাছের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছর। তেমন কোন পরিচর্যা করতে দেখা যায় না এসব লিচু গাছের। পরিচর্যা করা হলে দ্বিগুন ফলন পাওয়া যেত।
লিচুচাষীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, প্রতিদিন কাপ্তাই নতুন বাজারে প্রায় ৬ লাক্ষাধিক লিচু সরবরাহ হচ্ছে। প্রতি একশ’ লিচু তারা ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছে। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় বেপারী তাৎক্ষনিক তাদের নিকট হতে লিচু কিনে প্রতি একশ’ লিচু ১৪০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি করছে। স্থানীয় মোঃ আরফান, মোহররম আলী, আফসানা বেগম, কাকলী চাকমা জানান, সরবরাহ অনুযায়ী লিচুর দাম কম থাকার কথা। কিন্তু স্থানীয় বেপারীদের কারনে অধিক মূল্যে তাদের নিকট হতে লিচু কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। লিচু বেপারী নাছির বলেন, তিনি যে দামে লিচু ক্রয় করেছেন তার চেয়ে সামান্য লাভে বাজারে বসে লিচু বিক্রি করছেন।
লিচু চাষীরা আরো জানান, এ এলাকায় লিচু সংরক্ষনের কোন ব্যবস্থা নেই। যে হারে এলাকায় লিচু সহ অন্যান্য মৌসুমী ফলের উৎপাদন হয়-তা সংরক্ষনের ব্যবস্থা না থাকায় বিপুল পরিমান ফল নষ্ট হয়ে যায়। এতে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তেমনি সংরক্ষনের ব্যবস্থা থাকলে কৃষকরা আর্থিকভাবে আরো বেশী লাভবান হতো।
উপজেলার কামিলাছড়ি পাড়ার কল্পনা চাকমা (২৫) জানান, এক একর জমিতে ২০টি লিচুগাছ রোপন করেছেন তিনি। এগুলোর একেকটির বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছর। চলতি বছরে ২০টি গাছের লিচু বিক্রি করে তিনি লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা করেন।
একই পাড়ার চম্পা দেওয়ানের রয়েছে ৩৫টি গাছ। এসব গাছ থেকে তিনি ২ লক্ষাধিক টাকার লিচু বিক্রি করেছেন। তাদের মত একই পাড়ার বিমল কান্তি দেওয়ান, দয়ারাম চাকমা, প্রভাতি চাকমা, জ্ঞান প্রকাশ চাকমা, কালা মোহন চাকমা চলতি বছর লিচু বিক্রি করে অনেকটা স্বাবলম্বী হয়ে উঠার স্বপ্ন দেখছেন। এছাড়া উপজেলার জীবতলী, নাভাঙ্গা, বরাদম, রাইখালী, ওয়াগ্গা ইউনিয়নেও প্রচুর পরিমানে লিচুর ফলন হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে লিচু বিক্রি করে ৫ লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন বলে জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.