বূধবার বান্দরবানে প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি।
বান্দরবান জেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রশাসনের যোগসাজশে জাল ব্যালট পেপারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ব্যাপক ভোট ডাকাতি এবং লামার গজালিয়া ইউনিয়নে জেএসএস ও পিসিপি সদস্যদের উপর আওয়ামী লীগের বর্বর হামলার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির বান্দরবান শাখার প্রচার ও তথ্য সম্পাদক নিত্য লাল চাকমার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় বলা হয়, বান্দরবান প্রেসক্লাব চত্বরে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি বান্দরবান জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রোয়াংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উঃ ক্যবামং মারমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক উঃ জলিমং মারমা।
বিশেষ অতিথি ছিলেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি বান্দরবান জেলা কমিটির সভানেত্রী ও বান্দরবান সদর উপজেলার মহিলা-ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াইচিং প্রু মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি বান্দরবান জেলা কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক নিত্য লাল চাকমা, যুব সমিতি বান্দরবান জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক মংএসিং মারমা জিকো, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের বান্দরবান জেলা শাখার সংগ্রামী সভাপতি উবাচিং মারমা প্রমূখ।
প্রধান অতিথি উঃ জলিমং মারমা অবিযোগ করে বলেন, গত ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বান্দরবান জেলাধীন ২৫টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ২১টি ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ পূর্ব-পরিকল্পনা অনুসারে শত শত জাল ব্যালট পেপার ছাপিয়ে নির্বাচনের একদিন আগে তাদের কর্মী ও সমর্থকদের সরবরাহ করে এবং প্রশাসন ও নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজসে এসব জাল ব্যালট পেপার দিয়ে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের পক্ষে ব্যাপক জাল ভোট প্রদান করে। ভোট গণনার সময় অধিকাংশ কেন্দ্রে এধরনের নকল ব্যালট পেপার চোখে পড়ে। এসব জাল ব্যালট পেপার চিহ্নিত ও বাতিল পূর্বক পুন:গণনার জন্য জনসংহতি সমিতির সমর্থিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ কর্তৃক তাৎক্ষণিকভাবে মৌখিক ও লিখিতভাবে আপত্তি জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসাররা তাদের আপত্তি ও আবেদন কোনরূপ আমলে নেননি। জাল ব্যালট পেপারগুলো
বৈধ হিসেবে বিবেচনা করে একতরফা ও অবৈধভাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা করা হয়। তিনি এ নির্বাচনকে অবৈধ ও প্রহসনমূলক উল্লেখ করে অবিলম্বে এ নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা করে পুন:নির্বাচনের দাবী জানায়।
বিশেষ অতিথি ওয়াইচিং প্রু মারমা বলেন, অভিনব কায়দায় জাল ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট কারচুপি করে ভোটাধিকারের মতো নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারকে ভূলুন্ঠিত করে আওয়ামী-লীগের প্রার্র্থীদেরকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার জোরে অবৈধভাবে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে প্রত্যেক কেন্দ্রে অবৈধ ব্যালট পেপার ছিল।
অন্যদিকে বান্দরবান জেলাধীন লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের লেলিয়ে দেয়া ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা জনসংহতি সমিতি ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদস্য এবং গজালিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী চচিংমং মারমার পোলিং এজেন্টের উপর নগ্নভাবে অতর্কিত হামলা করে। এতে জনসংহতি সমিতির একজন ও পিসিপির দুইজনসহ মোট তিনজন সদস্য গুরুতরভাবে আহত হয়। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতারের জন্য জোর দাবী জানায়।
সভাপতির বক্তব্যে ক্যবামং মারমা অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ ভোট চোর, ভোট ডাকাত। তারা ভোট চুরি করে ও ভোট ডাকাতি করে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। তিনি দাবী করে আরো বলেন, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে আওয়ামী লীগ একটি আসনেও জয়যুক্ত হতে পারবেনা। অবৈধ ব্যালট পেপার দিয়ে, ক্ষমতার জোরে, প্রশাসনের যোগসাজশে জোর করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি অবিলম্বে পুন: নির্বাচনের দাবী জানান এবং ভোট চোর ও ভোট ডাকাতদের সবখানে প্রতিরোধ করার ঘোষণা দেন।
--হিলবিডি২৫/সম্পাদনা/সিআর.