বান্দরবানে সন্ত্রাসীদের হামলায় বৈশাখী টেলিভিশন ও চট্টগ্রাম মঞ্চ পত্রিকার প্রতিনিধি জহির রায়হান গুরুত্বর আহত হয়েছেন। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চকেম) ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের স্টেডিয়াম এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।এদিকে এ হামলার ঘটনায় বান্দরবান প্রেস ক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ কর্মরত সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ-মিছিল করেছে।জানা গেছে, গত ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রামের একটি হোটেল থেকে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত পাকিস্তানের তিন নাগরিককে পুলিশ আটক করে। এ সময় মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সভাপতি সালামত উল্লাহ ও তার সহযোগী ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শফিউল্লাহকেও আটক করা হয়। আটক সালামত উল্লাহ ও শফিউল্লাহ বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার তথ্য পুলিশ খুঁজে পায়। তাদের বিপুল অর্থের তহবিলের হদিস পেয়েছে পুলিশ। তাদের সঙ্গে স্থানীয় কারা জড়িত এ সর্ম্পকেও তথ্য পুলিশের হাতে রয়েছে। আরএসও সঙ্গে জেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী কয়েক নেতাও জড়িত আছে জানা গেছে। জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য কাজী মুজিবর রহমানের সঙ্গে আরএসও সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন সংবাদ চট্টগ্রাম মঞ্চ পত্রিকায় ছাপানো হয়। গত শুক্রবার নেতার বিরুদ্ধে পত্রিকায় সংবাদ ছাপানোর প্রতিবাদে ঝাড়– ও লাঠি মিছিল বের করা হয়। এতে আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। প্রতিবাদ মিছিলে সাংবাদিক জহির রায়হানের কুশ পুত্তলিকা ও চট্টগ্রাম মঞ্চ পত্রিকা পোড়ানো হয়।সূত্র জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি কালাঘাটা থেকে শহরের দিকে আসছিলেন সাংবাদিক জহির রায়হান। এ সময় স্টেডিয়াম এলাকায় আগে থেকে ১০ থেকে ১২জন সন্ত্রাসী লোহার রড ও লাঠি নিয়ে ওৎ পেতে ছিল। স্টেডিয়াম এলাকায় তার মোটরসাইকেল গতিরোধ করা হয়। এরপর অতকির্তে তার উপর সন্ত্রাসীরা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। এরপর সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এতে তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পান। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় প্রথমে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন।এদিকে এ ঘটনায় বান্দরবান প্রেস ক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক ওসমান গনি, প্রথম আলো প্রতিনিধি বুদ্ধজ্যোতি চাকমা, সাংবাদিক আব্দুল মালেক, মোজাম্মেল হক লিটন, কবির হোসেন ছিদ্দিকী প্রমুখ। সমাবেশে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সন্ত্রাসীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার পূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানানো হয়।এ ব্যাপারে কাজী মুজিবর রহমান বলেন, এই হামলার ব্যাপারে তিনি জানেন না। কে বা কারা ওই সাংবাদিকের উপর হামলা করেছে তার জানে নেই। তিনি গত তিনদিন ধরে শহরের বাইরে ছিলেন। কিছুক্ষন আগে তিনি জানতে পেরেছেন এক সাংবাদিকের উপর হামলা হয়েছে।জেলা পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টচার্য্য বলেন, সাংবাদিক জহির রায়হানের উপর কারা হামলা করেছে তা এখনো জানা যায়নি। মামলা না হওয়ায় এখনো কাউকে আটক করা যায়নি। তবে শিঘ্রই হামলাকারীদের আটক করা হবে।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.