বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বিভিন্ন মানদন্ডের বিচারে একটানা তিনবার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ধরে রেখেছে নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে ২ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে মাতামূহুরী নদীর পাশে ১৯৬৫ সালে ৮০ শতক জমির ওপর নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। জানা গেছে, অন্তত: ১০০ বছর আগে মারমা আদিবাসী লোকেরা এ এলাকায় একটি নতুন পাড়া করে বসতি স্থাপন শুরু করেন। মারমা ভাষায় এ পাড়ার নামকরণ হয় ‘র-চাই-র’ পাড়া বলে। যার বাংলা অর্থে নতুন পাড়া। ‘র-চাই-র পাড়া’ কালের পরিক্রমায় নয়াপাড়া নামে এখন সরকারি নথিভূক্ত হয়েছে। এ পাড়ার নামানুসারেই বিদ্যালয়টির নামকরণ হয়েছে। বিদ্যালয়ে বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৫০৪ জন। এরমধ্যে শিশু শ্রেণির ৪৬, প্রথম শ্রেণির ৮৬, দ্বিতীয় শ্রেণির ১২৫, তৃতীয় শ্রেণির ৮৮, চতুর্থ শ্রেণির ৯৪ ও পঞ্চম শ্রেণির ৬৫ জন ছাত্রছাত্রী অধ্যায়ন করছে। গত ৫ বছরে সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ২২২ জনের মধ্যে ২২০ জন ছাত্রছাত্রী পাস করেছে। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬ জন। টেলেন্টপুলে ৪ জন ও সাধারণ গ্রেডে ১১ জন ছাত্রছাত্রী বৃত্তি পেয়েছে।
এ সাফল্য পশ্চাৎপদ এলাকার জন্য দৃষ্টান্ত বলেছেন বিদ্যালয়ের অবিভাবকরা। তারা তাদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার সুবিধার্থে বিদ্যালয়ের নতুন ভবনসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানেরও দাবী জানিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ে দুইটি পাকা ও একটি সেমিপাকা ভবনে ৫টি কক্ষের একটি অফিসকক্ষ ও চারটি শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় চারটি শেণিকক্ষে ধারণ ক্ষমতার অধিক ছাত্রছাত্রী চাপাচাপি করে বসে পড়ালেখা করছে। শ্রেণিকক্ষে চাপের মূখে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকের পাঠদান সঠিকমতো নিতে পারছে না।
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানায়,শ্রেণি কক্ষের অভাবে গাদাগাদি করে বসে লেখাপড়া করতে কষ্ট হয়। ক্লাসে বসার জায়গা হয় না। শ্রেণিকক্ষ বাড়ালে পড়ালেখায় সুবিধা হবে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান,শ্রেণির কক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে বসে পড়ালেখা করছে। সপ্তাহে দুইদিন মাল্টিমিডিয়া পাঠদান (ডিজিটাল পদ্ধতি) করানো হয়। শ্রেণিকক্ষের অভাবে মাল্টিমিডিয়া পাঠদানও ব্যাহত হয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কফিল উদ্দিন বলেন, শিক্ষকদের আন্তরিকতায় স্কুলে পড়ালেখা যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। শিক্ষার্থীর তুলনায় স্কুলের অবকাঠামোগত সুবিধা নেই। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহায়তা প্রয়োজন।
প্রধান শিক্ষক ফোরকানারা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের স্যানিটেশন-অবকাঠামোগত নানা সমাস্যার অবর্তেও অবিভাবক ও শিক্ষকদের আন্তরিকতায় বর্তমানে ভর্তি ও পাশের হার শতভাগে উন্নীত হয়েছে। সমাপনী পরীক্ষায়ও আশান্বিত বৃত্তির ফলাফল অর্জন হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াছ বলেন, বিদ্যালয়টির পড়ালেখার মান ভাল। অবকাঠামোগত উন্নয়নে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.