দীর্ঘ যুগ যুগ ধরে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলা পূজগাং গণ শশ্মানটি। কোনো ধরনের বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় শশ্মানের পবিত্রতা রক্ষা করা যাচ্ছে না। এতে গরু-ছাগল চরণ ভূমি হওয়াতে পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে। এলাকাবাসী শশ্মনের পবিত্রতা রক্ষা জন্য বাউন্ডারি ওয়ালসহ শশ্মানের ভিতরে একটি টিন সেড ঘর নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন।
জানা যায়, বাংলাদেশ জন্মের আগে থেকে পূজগাং গণ শশ্মানটি ৫ গ্রামের হাজার হাজার লোকজন ব্যবহার করে আসছেন। কিন্তু গরু-ছাগল চরণ ভূমিতে পরিণত হওয়ায় শশ্মানটির পবিত্রতা রক্ষা না থাকায় অনেকেই নিজ নিজ জায়গায় মৃত ব্যাক্তিকে দাহ করছেন।
মুনি পাড়ার মুনি কার্বারী ও মধুমঙ্গল পাড়ার শান্তি কুমার কার্বারী জানান, যুগ যুগ ধরে এ শশ্মানে মৃত ব্যক্তিদের দাহক্রিয়া করে আসছি। এ শশ্মানের মধু মঙ্গল পাড়া, মুনি পাড়া, অনিল পাড়া, প্রভূ মুনি পাড়াসহ ৫ গ্রামের প্রায় দশ হাজার মানুষ মৃত ব্যক্তিদের দাহ করে থাকে। কিন্তু শশ্মানের বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় শশ্মানের পবিত্রা রক্ষা করা যাচ্ছে না। আমাদের বৌদ্ধ ধর্মীয় নীতি অনুযায়ী মৃত ব্যক্তিকে দাহ করার আগে তাঁর সৎ গতির কামনার জন্য শশ্মানে বৌদ্ধ ভিক্ষু এনে মঙ্গল সূত্রসহ পঞ্চশীল দিতে হয়। বর্ষা মৌসুম হলে তা করা খুবই কষ্টকর হয়। তাই একটি টিন সেড ঘর স্থাপন খুবই দরকার।
শশ্মানের পাশ্ববর্তী সবুজ ক্লাবের সভাপতি ধনঞ্জয় চাকমা জানান,শশ্মান সংলগ্ন তাদের ক্লাব। শশ্মানে কোনো ধরনে ঘর না থাকায় বর্ষা মৌসুমে মৃত ব্যাক্তি দাহক্রিয়ার আগে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করে দিতে খুবই কষ্ট হয়। সে জন্য তাদের ক্লাবে বারান্দায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানটি করতে হচ্ছে।
এদিকে ৩আগষ্ট সবুজ ক্লাব ফুটবল টুর্নামেন্টে সমাপনী খেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সদস্য সতীশ চন্দ্র চাকমা ও বিশেষ অতিথি ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সদস্য মংশাফ্রু মারমা অপু ও সদস্য জুয়েল চাকমা সবুজ ক্লাবটি পরিদর্শনের সময় এলাকাবাসী শশ্মানের চিত্রটিও তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সদস্য সতীশ চন্দ্র চাকমা বলেন আমি এ এলাকার সন্তান। এটা আমারও শশ্মান। শশ্মানটিতে একটি টিন সেড ঘরসহ বাউন্ডারি ওয়াল করার চেষ্টা করছি। এজন্য খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের উন্নয়ন কমিটির আহবায়ক মংশাফ্রু মারমা অপুকে অনুরোধ করেছি। আশা করি তিনি কাজটি করার আগ্রহ প্রকাশ করবেন।
খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের উন্নয়ন কমিটির আহবায়ক মংশাফ্রু মারমা অপু বলেন- যেহেতু ৫ গ্রামের প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার মানুষের জন্য এ শশ্মানটি। তাই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শশ্মানটির পবিত্রতা রক্ষার জন্য শশ্মানে একটি টিন সেড ঘরসহ বাউন্ডারি ওয়ার করে দেওয়া হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.