মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে শনিবার রাঙামাটিতে কর্মরত সংবাদকর্মীদের সাথে জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তার মধ্যে এক মতনিমিয় সভা অনুষ্ঠি হয়।
সভায় মৎস্য কর্মকর্তারা জানান,জীব বৈচিত্র্যর স্থান নষ্ট হওয়ায় ও কাপ্তাই হ্রদ দুষনের কারণে কাপ্তাই হ্রদের দিন দিন মাছের প্রজাতির হ্রাস পাচ্ছে। ইতোমধ্যে হ্রদের দেশীয় মহাশোল, পাবদা, ঘনিয়াসহ ৬ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তি হয়েছে। এক সময় কাপ্তাই হ্রদে ৭৬ প্রজাতির মাছের মধ্যে ৬৮প্রজাতির দেশীয় মাছের বিচরণ ছিল। এ অবস্থায় চলতে থাকলে হ্রদে মাছের উৎপাদন দিন দিন আশংকাজনক হারে হ্রাস পাবে।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সন্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ হান্নান মিয়া। এসময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৎস্য চাষ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের(৩য়) উপ-প্রকল্প পরিচালক মোঃ আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ মঃস্য গষেনা ইনস্টিটিউট রাঙামাটির গবেষনা কর্মকর্তা কাজী বেলাল উদ্দীন ও মোঃ ইসহাক।
মৎস্য কর্মকর্তারা আরও বলেন, সংরক্ষণের অভাবে কাপ্তাই হ্রদের পরিবেশ এখন ধ্বংসের মুখে। বিষাক্ত দ্রব্য, বৈর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনা নিক্ষেপসহ নানা কারণে কাপ্তাই লেকের পরিবেশ মারাত্মকভাবে দুষণের শিকার হচ্ছে। পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে হ্রদের তলদেশ। এছাড়া যত্রতত্রভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে হ্রদ। ফলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে মৎস্য বিচরণ ক্ষেত্র ও আবাসস্থল। এতে উদ্বেগজনক হারে হ্রদে মাছের উৎপাদন কমে যাচ্ছে।
তারা আরও বলেন,পার্বত্য অঞ্চলে কাপ্তাই লেকের পাশাপাশি মাছ উৎপাদন বাড়াতে সরকার মৎস্য অধিদফতরের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৎস্যচাষ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায় বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পে ৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
মৎস্য কর্মকর্তা ও গবেষকরা বলেন, কাপ্তাই হ্রদে এক সময় দুই প্রজাতির চিংড়ি,দুই প্রজাতির কচ্ছপ ও দুই প্রজাতির ডলফিন পাওয়া যেত। বর্তমানে ছোট প্রজাতির চিংড়ি পাওয়া গেলেও গলদা চিংড়ি এবং কচ্ছপ ও ডলফিন প্রজাতির মাছ হ্রদ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এছাড়া হ্রদে বিলুপ্তির পথে রয়েছে দেশি মহাশোল, মধু পাবদা, পোয়া, ফাইস্যা, তেলে গুলশা ও সাদা ঘনিয়া। ক্রমে কমে যাচ্ছে রুই, কাতলা, মৃগেল, বাঁচা, পাটি পাবদা ও বড় চিতল প্রজাতির মাছগুলো। বর্তমানে হ্রদে প্রধান্য বিস্তার করেছে কাচকি, চাপিলা, কাটা মইল্যা, তেলাপিয়া, কালিবাউস, আইড়, বাটা, ফলি ও মলা। দুর্ঘটনাক্রমে হ্রদে সংযোজিত মাছের প্রজাতির মধ্যে রয়েছে গ্রাসকার্প, সিলভার কার্প, কার্পিও, রাজপুটি, তেলে নাইলোটিকা, তেলে মোজান্বিকা, থাই মহাশোল, আফ্রিকান মাগুর ও থাই পাঙ্গাস।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.