চাকমা ও মারমা ভাষার পাঠ্য পুস্তকে শুধুমাত্র নিজস্ব লিপিতে প্রকাশের দাবিসহ ৫দফা দাবি জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের ২৪ বিশিষ্ট নাগরিক। বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, গেল ৯ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে লিখিত ও মৌখিকভাবে দুই লিপি সম্ভলিত চাকমা ও মারমা ভাষার বই বিতরণ কার্যক্রম স্থগিতকরণের অনুরোধ জানানো হলেও তা উপদেষ্টা প্রত্যাখান করেছেন।মঙ্গলবার চাকমা সার্কেলের সচিব সুব্রত চাকমার পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে অন্য দাবিগুলো হলো সংশ্লিষ্ট বইসমূহ প্রত্যাহার করা না হলে, তা কেবল শিক্ষক সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। তবে কোন ক্রমেই ছাত্র ছাত্রীদের নিকট দুই লিপি সম্বলিত পুস্তক বিতরণ করা না হয়, আদিবাসী ভাষাভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য গঠিত কমিটিগুলোকে পুনরায় সক্রিয় করা, যেসব নৃগোষ্ঠীর ভাষার লিপি নেই বা বিতর্কিত, সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায় ও বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে লিপি নির্ধারণ ও আদিবাসী ভাষার জন্য বিশেষ শিক্ষক নিরয়াগ ও নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৭ সালে সরকার কর্তৃক চাকমা ও মারমা ভাষাসহ ৫টি আদিবাসী ভাষআয় প্রাথমিক স্তরে বই প্রকাশ ও বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু ইদানিং চাকমা ও মারমা ভাষার বইসমূহে সংশ্লিষ্ট ভাষার লিপির পাশাপাশি বাংলা লিপির বিধান সংযুক্ত করা হয়েছে। দুই লিপির সম্ভলিত সানতালি ভাষার পুস্তক মুদ্রণ ও বিতরণের প্রস্তাব আসলে তা শিশু মনস্তাত্তি¡ক ও এমবিটি-এমএলই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে প্রত্যাখান করা হয়। যা চাকমা এবং মারমা ভাষার পুস্তকের ক্ষেত্রেও এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা যৌক্তিক, ন্যায়সংগত ও বৈষম্যহীণ হবে। যদিও এই উদ্যোগটি শিশুদের পাঠদানের সুবিধার্থে করা হয়ছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে এ দ্বৈত বর্ণমালার পদ্ধতি সংশ্লিষ্ট শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষা অর্জনে বিঘœ ঘটাবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গেল ৯ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে লিখিত ও মৌখিকভাবে দুই লিপি সম্ভলিত চাকমা ও মারমা ভাষার বই বিতরণ কার্যক্রম স্থগিতকরণের অনুরোধ জানানো হলেও তা উপদেষ্টা প্রত্যাখান করেছেন। বিৃবতিতে আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষা নিশ্চিত করা শুধু তাদের মৌলিক অধিকারই নয়, দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষার জন্যও অপরিহার্য। সরকার যেন এই প্রস্তবগুলো বিবেচনা করে দ্রæত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করে।
বিবৃতিদাতারা হলেন, চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়, মংসার্কেলের চীফ সাচিংপ্রæ চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান, মোনঘর স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি শ্রীমৎ শ্রদ্ধালংকার মহাথের, লেখক ও গবেষক প্রফেসর মংসানু চৌধুরী, বান্দরবান স্থানীয় সরকার পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান থোয়াইং চ প্রæ মারমা, বাংলা একাডেমীর সাহিত্য পুরুস্কারপ্রাপ্ত প্রভাংশু ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কেএস মং মারমা, বাংলা একাডেমীর সাহিত্য পুরুস্কারপ্রাপ্ত কবি মৃত্তিকা চাকমা. শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, বাংলাদেশ ব্যাংসোবেক মহাব্যবস্থাপক মং ক্য শৈনু নেভী, বান্দরবান সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউটের সাবেক গবেষনা কর্মকর্তা উচ নু, চিটাগং হিল ট্র্যাক্টস রাইটার্স ইউনিয়নের সভাপতি অংসুই মারমা, বিশিষ্ট নাট্যকার অলেন্দ্র ত্রিপুরা, মারমা ভাষার শিশুতোষ পাফ্য পুস্কক লেখক কশৈপ্রæ খোকা, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ মং উষা থোয়াই, লেখক ও গবেষক আর্যমিত্র চাকমা, মানবধিকার কর্মী ইলিরা দেওয়ান, মোনঘর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আশোক কুমার চাকমা, আদিবাসী ফোরামের পার্বত্যাঞ্চল শাখার সাধারন সম্পাদক ইন্টু মনি তালুকদার, আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা পদক প্রাপ্ত মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, চিটাগং হিল ট্র্যাক্টস রাইটার্স ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক মুকুল কান্তি ত্রিপুরা, চাকমা ভাষা প্রশিক্ষক বিদ্যূৎ জ্যোতি চাকমা ও মারমা ভাষা লেখক ক্যসা মং মারমা।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর,