মঙ্গলবার রাঙামাটিতে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি উন্নয়নে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সভা কক্ষে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী। এ সময় জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাঃ আশরাফুল ইসলাম, পরিষদ সদস্য অংসুছাইন চৌধুরী, পরিষদ সদস্য বিপুল এিপুরা, পরিষদ সদস্য সবির কুমার চাকমা, পরিষদ সদস্য দিপ্তীময় তালুকদার, পরিষদ সদস্য রেমলিয়ান পাংখোয়া, ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা সাগরিকা রোয়াজা, মারমা সংস্কৃতি সংস্থার সাংস্কৃতিক সম্পাদক মংসুই প্রæ মারমা, সাধারণ সম্পাদক খংউচিং মারমা, বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা সমাজ কল্যাণ সংস্থার মহাসচিব এডভোকেট দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যা, বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা সমাজ কল্যাণ সংস্থার সদস্য অজিত কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, জুম ঈসথেটিক কাউন্সিলের প্রতিনিধি বিনয় চাকমা, সি আই পি ডি-র চাকমা ভাষা সমন্বয়কারী শান্তি চাকমা বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সংরক্ষণে পরিষদ থেকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সরকার পরিষদকে ক্ষমতা এবং এক্তিয়ার দিয়েছে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। বক্তারা জেলা সদরে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলাসহ ভাষা ও সংস্কৃতি উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি রক্ষার সঙ্গে তাদের অস্তিত্ব নির্ভর করে। এসমস্ত বিষয়গুলো যদি না থাকে তাহলে তাদের পরিচয়ও থাকেনা। তাদের ভাষা, সংস্কৃতি সংরক্ষণ, চর্চা এবং বিকাশের জন্য জেলা পরিষদ ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট যৌথভাবে কাজ করতে পারে। সরকার মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের জন্য ২০১৭ সাল থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করেছে। শিক্ষকদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করেছে। মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের জন্য প্রশিক্ষিত শিক্ষক তৈরি হচ্ছে। আমরা সকলের সাথে কথা বলে মাতৃভাষায় শিক্ষাদানে প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আেেরা বলেন, ভাষার পাশাপাশি আমাদেরকে সংস্কৃতি উন্নয়নেও কাজ করতে হবে। আমাদের কাজ আমাদেরকে করতে হবে। হারিয়ে যাওয়া জিনিস সংরক্ষণ করতে হবে। আধুনিকতাকে অবশ্যই স্বাগত জানাই। কিন্তু মূলকে বাদ দিয়ে নয়। প্রাচীন এবং আধুনিক দুটোকে সমন্বয় করে আমাদেরকে এগুতে হবে। আমাদেরকে সংশয় এবং সন্দেহ নিয়ে বসে থাকলে হবেনা। সরকার বসে আছে আমাদেরকে সাপোর্ট দেয়ার জন্যে। এ কাজগুলো করার জন্য যেখানে যেখানে দ্বারস্থ হবার দরকার সেখানে আমরা দ্বারস্থ হবো।
তিনি আগামী এপ্রিলের মধ্যে বৈসাবির আগে ৭টি সম্প্রদায়ের ৭টি ভাষা শিক্ষার অভিধান তৈরি, বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রাচীন অলংকার, ঐতিহ্যবাহী পোশাক সংরক্ষণ এবং ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান প্রশিক্ষণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পরিষদে পেশ করার জন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীভিত্তিক সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.