রোববার বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের বসবাসরত ম্রো জনগোষ্ঠীরা ভূমি দখলের প্রতিবাদে কালচারাল শোডাউন ও সমাবেশ করেছে।
নীলগীরি পর্যটনের নিকটবর্তী নাইতং পাহাড়সহ (চন্দ্র পাহাড়) প্রায় ৮০০ একর ভূমি সিকদাল গ্রুপের (আর এন্ড আর হোল্ডিং) বিরুদ্ধে দখলের অভিযোগ উঠেছে। দখলকৃত জায়গাতেসিকদার গ্রুপের মেরিয়ট নামে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে।
রোববার সকালে চিম্বুক পাহাড়ের শত শত ম্রো জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ ভূমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যানার, পোষ্টার, ম্রোদের ঐতিহ্যবাহী ফ্লুং (বাঁশের তৈরি বিশেষ এক ধরণের বাঁশি) নিয়ে নারী-পুরুষ, শিশুরা-যুবারা কাপ্রু পাড়া বাজার এলাকায় হাজির হয়। চিম্বুক পাহাড় ও তার আশপাশে বসবাসরত ২৫টি পাড়া বা গ্রামের শত শত লোক কাপ্রু পাড়া বাজার এলাকায় সমাবেশ করে। ভূমি দখলদারদের বিরুদ্ধে কালচারাল শোডাউনের মাধ্যমে অভিনব প্রতিবাদ জানায় ম্রো জনগোষ্ঠীর লোকজন।
ভূমি দখলের প্রতিবাদে কালচারাল শোডাউন ও সমাবেশে আগত ম্রো জনগোষ্ঠীর লোকজন ও নেতারা অভিযোগ করেন, শত শত বছর ধরে চিম্বুক পাহাড়সহ নীলগীরিতে ম্রোরা বসবাস করে আসছে। বন্যজন্তুসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। তাদের জীবিকার প্রধান উৎস এই পাহাড় আস্তে আস্তে করে পর্যটনের নামে দখল হয়ে যাচ্ছে। এখন সিকদার গ্রুপ মেরিয়ট নামে পাঁচ তারকা মানের হোটেল নির্মাণে প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।
নীলগীরির নিকটবর্তী কাপ্রু পাড়া বাজার এলাকা সমাবেশে বক্তারা জানান, সিকদার গ্রুপ পর্যটনের নামে প্রায় ৮০০ একর ভূমি লিজ নিয়ে ভূমি দখলের কাজ সম্পন্ন করছে। ওই জায়গা সম্পূর্ণভাবে দখলে গেলে কাপ্রু ম্রো পাড়া, কলাই পাড়া, দলা পাড়া, এরা পাড়া ও রেমনাই ম্রো পাড়া উচ্ছেদ হয়েছে। এই পাঁচটি পাড়ার ৪০৫টি পরিবারে তাদের ভিটেমাটি হারা হবে। বন্যজন্তুর হাত থেকে বাঁচতে ম্রোরা উচু স্থানে বসবাস করে। এখন উচু স্থানে বসবাস করতে গিয়ে ভূমি দস্যুদের নজরে পড়েছে তাদের চিরচেনা উচু পাহাড়গুলো।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কাপ্রু পাড়াবাসী মেনপং ম্রো, এম্পু পাড়া কার্বারী (পাড়া প্রধান) ইনচং ম্রো, গালেংগ্যা পাড়া কার্বারী মেনইয়ং ম্রো, দলা পাড়ার লংআন ম্রো, রামরী পাড়ার মেনঙই ম্রো, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের জেলা কমিটির সদস্য উটিং মারমা ও ম্রো লেখক ইয়াঙান ম্রো। সমাবেশ সমাপনি বক্তব্য রাখেন রেংয়ং ম্রো।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.