করোনাকালে জাতীয় বাজেট ও আদিবাসী শীর্ষক অনলাইন আলোচনা আয়োজন করেছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের মূখপাত্র সোহেল হাজনের পাঠানো এক প্রেস বার্তায় বলা হয়, গেল বৃহস্পিতবার বাজেট ঘোষনার পর আই.পি.নিউজ.বিডি.কম এর সহযোগিতায় আইপিনিউজ এর ফেসবুক পেইজ থেকে আলোচনা সভায় উপস্থাপিত বাজেট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানায় আলোচকরা। এতে আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রংয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, প্রফেসর মেসবাহ কামাল, এএলআরডি-এর নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা, আদিবাসী ফোরামের সদস্য মেনথেইন প্রমিলা, রিপন বানাই ও জয়েনশাহী আদিবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক।
আলোচনার শুরুতে বিষয়টির ওপরে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য তোলে ধরেন আদিবাসী ফোরামের সদস্য সোহেল হাজং। তিনি বলেন, সংসদে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য যে বাজেট পেশ করা হলো সেখানে বরাবরের মতো দেশের ৩০ লক্ষ আদিবাসীরা উপেক্ষিত হয়েছে। এই করোনাকালেও দেশের অবহেলিত আদিবাসীদের গুরুত্ব দিয়ে বাজেট হয়নি। এবারের বাজেট বক্তৃতায়ও দেশের অবহেলিত আদিবাসী সম্পর্কে কোন প্যারা বা বক্তব্য রাখা হয়নি। এছাড়া এই করোনাকালে বাজেটে আদিবাসীদের জন্য বিশেষ কোন বরাদ্দ নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে স্বাভাবিক হারে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, সমতলের ২০ লক্ষ আদিবাসীদের জন্য মাত্র ৮০ কোটি টাকা বার্ষিক বরাদ্দ আসলে কিছুই না। তিনি মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বাজেট করার পক্ষে উল্লেখ করে বলেন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য যেহেতু এখনও কোন মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয়নি তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় একটি অধিদপ্তর খোলে সমতলের আদিবাসীদের জন্য বাজেট বরাদ্দ বাস্তবায়ন করার প্রয়োজনের কথা বলেন।
প্রফেসর মেসবাহ কামাল বলেন, আদিবাসীদের জন্য বাজেট বাড়ানো প্রয়োজন আবার সেই বরাদ্দ আসলে আদিবাসীদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছাচ্ছে কিনা সেটাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তাই বাজেট বাস্তবায়নেও একটি জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।
পল্লব চাকমা বলে, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের জন্য আলাদা কোন বরাদ্দ নেই এজন্য এ পরিষদের দ্বারা এ করোনা কালেও কোন উদ্যোগ হাতে নিতে দেখি না। বরাদ্দের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের প্রতি চেয়ে থাকতে হয়। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের জন্য জাতীয় বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখার জন্য দাবি জানান।
আলোচনায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে ৭ দফা দাবীর সুপারিশমালর মধ্যে কোভিড-১৯ মহামারির সময় ও মহামারি পরবর্তীকালে আদিবাসীদের সুরক্ষা ও তাদের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণে কমপক্ষে ১১ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক বরাদ্দ দেওয়া, সমতলের আদিবাসীদের উন্নয়ন ও অংশগ্রহণমূলক বাজেট নিশ্চিতকরণে একটি পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করা, আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর জন্য খাতভিত্তিক ও মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করা; সকল মন্ত্রণালয়ের/বিভাগের বাজেটে আদিবাসীদের জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখা এবং বরাদ্দের সুষ্ঠু বাস্তবায়নে আদিবাসীদের সরাসরি সম্পৃক্ত করা এবং এ বিষয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা; জাতীয় বাজেট বক্তৃতায় আদিবাসী বিষয়ে স্পষ্ট বিবরণী রাখা। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সঠিক সংখ্যা নিরুপণ এবং বাজেট বরাদ্দ জনসংখ্যার ভিত্তিতে বৃদ্ধি করাসহ ইত্যাদি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.