এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার রাঙমাটি জেলার এবারে জিপিএ-৫ সংখ্যা বাড়লেও অকৃতকার্যের সংখ্যা বেড়েছে। এবার পাসের হার ৬৮ দশমিক ৬০ ভাগ।
জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের শিক্ষা ও কল্যাণ শাখা সূত্রে জানা গেছে, গেল বছরের তুলনায় এবার পাসের হার কমলেও জিপিএ-৫ বেড়েছে। এবার জেলা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৩ পরীক্ষার্থী। জেলার অন্যতম মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাঙামাটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে একজনও জিপিএ-৫ পায়নি। সবচেয়ে বেশী জিপিএ-৫ পেয়েছে কাপ্তাই নেভী উচ্চ বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়ের জিপিএ-৫ সংখ্যা ৪৪। এর পর লেকার্স পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৬ জন। এবার জেলার মোট ১৯ কেন্দ্রে ৭৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অংশ নিয়েছে ৮ হাজার ৪১০ পরীক্ষার্থী। আর শতভাগ সাফল্য অর্জন করেছে, কাপ্তাই নেভী হাই স্কুল ও রাঙামাটি লেকার্স পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
ফলাফলে দেখা যায়, এবার জেলার ১২ বিদ্যালয়ে পাসের চেয়ে অকৃতকার্য সংখ্যা বেশী। জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ওই দুটিতে শতভাগ সাফল্য হলেও তুলনামূলকভাবে অন্যদের ফল তেমন সন্তোষজনক নয়। জেলা শহরের রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ফলাফল নিয়ে হতাশার কথা ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অনেকের অভিযোগ ঐতিহ্যবাহী ওই দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দিন দিন পড়ালেখার কমে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে যোগ্য ও দক্ষ প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয় দুটি এ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ছে।
ফলাফলে আরো দেখা গেছে, রাঙামাটি সদর উপজেলার খারিক্ষং উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৭ জন, বড়দাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫১ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৮ জন, সাপছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৪ জন, লংগদু উপজেলা সদরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৭ জন, বাঘাইছড়ি উপজেলার তুলাবান উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭৮ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৭ জন, আমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২১ জন, কাপ্তাই উপজেলার কে,আর,সি হাই স্কুলে ১১৮ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫২ জন, সদর উপজেলার কুতুকছড়ি বড়মহাপুরম উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮৭ জন, জুরাছড়ি উপজেলার ভূবনজয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ২১৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮৪ জন, বরকল উপজেলার বিলছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২২জন, সুবলং উচ্চ বিদ্যালয়ে ১১৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৯ জন, বরুণাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০৪ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৮ জন এবং হাজাছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫৪ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২ জন পাস করেছে। এসব বিদ্যালয়ে বাকি পরীক্ষার্থীরা অকৃতকার্য।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, জেলায় গতবারের চেয়ে এবার পাসের হার ভাল। জিপিএ-৫ অনেক বেড়েছে। তবে প্রত্যন্ত এলাকার বেশকিছু স্কুলে পাসের চেয়ে অকৃতকার্য বেশী। এর মূল কারণ, কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হাই স্কুল করা হয়েছে। অথচ ওইসব স্কুলে ভাল শিক্ষক নেই। ফলে ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে।
তিনি আরো জানান,আবার প্রত্যন্ত এলাকায় বেশকিছু হাই স্কুল আছে, যা বোর্ড থেকে পাঠদানের অনুমতি নেই। যে কারণে ওইসব স্কুলের শিক্ষার্থীদের অন্য স্কুল থেকে নিবন্ধন করিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলগুলোতে গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ানোর জন্য ভাল শিক্ষক নেই। আর স্থানীয় রাজনীতির প্রভাবও বিস্তার ঘটে। এসব কারণে প্রত্যন্ত এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে ফলাফল বিপর্যয় ঘটতে পারে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.