উৎসব পরিবেশে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করলো মাটিরাঙ্গার সাপমারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিদ্যালয়টিতে সরকারি নির্দেশনা মেনে স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য গঠিত হয় নির্বাচন কমিশন। বিকাল আড়াইটায় ভোটগণনা শেষে প্রার্থী ও সমর্থকদের সামনে ফলাফল ঘোষনা করেন নির্বাচন কমিশনার নিক্সন চাকমা। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী ৩য় শ্রেণি থেকে জয়সেন চাকমা ও সুপ্রিয়া চাকমা; ৪র্থ শ্রেণি থেকে চন্দনা ত্রিপুরা, ও পেট কুমার ত্রিপুরা; ৫ম শ্রেণি থেকে জলতা চাকমা, চন্দ্র বিকাশ ত্রিপুরা ও নয়ন ত্রিপুরা প্রাথমিকভাবে স্টুডেন্টস কাউন্সিল সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়।
এতে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীর সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশনার নিক্সন চাকমা, প্রিজাইডিং অফিসার বিনয় চাকমা, পোলিং অফিসার কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরা ও অপর সহপাঠি পোলিং অফিসার মিকি চাকমা।
তাছাড়া ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র মর্তজয় ত্রিপুরা ও ৫ম শ্রেণির ছাত্রী এলিনা চাকমাকে ভোটকক্ষ পাহাড়া দেয়ার জন্য নিরাপত্তা পুলিশ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। নির্বাচন শিডিউল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র আহবান করা হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি। ১৮ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন জমা দানের শেষ দিন এবং একই দিন মনোনয়ন বাছাই ও বৈধপ্রার্থীর তালিকা প্রকাশ হয়। নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি। সকাল সাড়ে ১০টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে দুপুর দেড়টায় শেষ হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাধন কান্তি চৌধুরী জানান খুব শীঘ্রই নির্বাচিত সদস্যদের পরিপত্র মোতাবেক ৭টি ভিন্ন ভিন্ন দপ্তর বন্টন করা হবে।সেগুলো হল শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ক্রিয়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, শৃংখলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বাগান সৃজন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
প্রধান শিক্ষক আরও জানান ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে প্রাথমিক পর্যায় থেকেই নেতৃত্ব ও গণতন্ত্রমনা তৈরি করা এই নির্বাচনের প্রধান উদ্দেশ্য। তাছাড়া গ্রামে এমন নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে ভোটাধিকার ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পর্কে সচেতন করা যায়। কাউন্সিল নির্বাচন সম্পর্কে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নিখিল চন্দ্র ত্রিপুরা জানান, “প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন কমিশন দক্ষতার সাথে সুষ্ঠুভাবে কাউন্সিল নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আবার অন্যদিকে বিদ্যালয়ের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা না থাকায় ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের খুব অসুবিধা দেখা দেয়। সেজন্য দু:খ লাগে।
উল্লেখ্য ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সাপমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৬ সালে জাতীয়করণের আওতায় আসে। ফলাফল ঘোষণা শেষে বিজয়ীসদস্যদের সাথে তাদের অনুভূতি জানতে চাইলে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী জলতা চাকমা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় অথবা বাগানসৃজন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের ইচ্ছা ব্যক্ত করে। পাশে দাঁড়িয়ে ৪র্থ শ্রেণির অপর বিজয়ী সদস্য জানায় তার ইচ্ছা হলো ক্রিয়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় অথবা যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের ইচ্ছা ব্যক্ত করে ৪র্থ শ্রেণির প্রতিনিধি সদস্য পেট কুমার ত্রিপুরা।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.