বহুল আলোচিত হিল উইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী কল্পনা চাকমার অপহরণের ২৮ বছর উপলক্ষে বুধবার রাঙামাটির কতুকছড়িতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও জনতার আদালতের রায়ে চিহ্নিত অপহরণকারীদেরকে প্রতীকী ফাঁসি প্রদান করা হয়েছে।
দক্ষিণ কতুকছড়ির সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত ইউপিডিএফ সমর্থিত সংগঠন হিল ইউমেন্স ফেডারেশন,পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ ও নারী আত্মরক্ষা কমিটি যৌথভাবে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা ও জনতার আদালতের রায় পড়ে শোনান পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি রিনিসা চাকমা।হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রিতা চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্য মধ্যে বক্তব্যে দেন ল্যাম্প পোস্টের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ফারহানা হক শ্যামা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নিকন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য এন্টি চাকমা ও দয়াসোনা চাকমা ও রাঙামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নিকি চাকমা। এর আগে প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের টিম পাহাড়ের দমন-পীড়নের ওপর একটি নাটিকা প্রদর্শন করে।পরে জনতারআদালতের রায় ঘোষণার পর পরই পাহাড়িদের রীতি অনুযায়ী মানুষের মৃত্যুর পর যেভাবে ঢোল বাঁজানো হয় প্রতীকী হিসেবে সেভাবে ঢোল বাজিয়ে জনতা কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারীদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যু দন্ড কার্যকর করেন।পরে অপরাধীদের কুশপুত্তলিকাগুলো টেনে নিয়ে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের পাশে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
সমাবেশে বক্তারা দীর্ঘ ২৮ বছরেও কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারীদের বিচার না করে আদালতের মাধ্যমে অপরাধীদের দায়মুক্তি দেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান। এ দায়মুক্তির ঘটনাকে অপরাধীদের রক্ষায় রাষ্ট্রীয় কৌশল বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।
সমাবেশে ফারহানা হক শ্যামা বলেন, কল্পনা চাকমা অপহরণের ঘটনা পাহাড়ে একটি জঘন্যতম ঘটনা। একটি স্বাধীন দেশে সবার মত প্রকাশ করার অধিকার রয়েছে। অথচ কল্পনা চাকমা পাহাড়ের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির কথা বলার কারণে অপহরণের শিকার হন। যার বিচারের দাবিতে আজও আন্দোলন করতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন প্রথম প্রহরে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা লাইল্যা ঘোনা বাড়ী থেকে কল্পনা চাকমা অপহৃত হন। পরদিন বাঘাইছড়ি থানায় তার বড় ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা চিহিৃত অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে অপহরনের মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ মামলাটি দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে চলার পর গত ২৩ এপ্রিল রাঙামাটির চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সিনিয়র ম্যাজিষ্ট্রেট ফাতেমা বেগম মুক্তা মামলাটি খারিজ করে দেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.