কাপ্তাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ভাইস চেয়ারম্যানের পদ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার জেটিঘাটস্থ কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে উপজেলা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগের ব্যানাওে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এম নুর উদ্দিন সুমন। এ সময় কাপ্তাই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ফজলুল কাদের মানিক, সাধারণ সম্পাদক একরামুল হকসহ কাপ্তাই উপজেলা ও ইউনিয়নের যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ এবং উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন দক্ষিণ বন বিভাগের পরিবহনের একজন সফল ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী। তার ব্যবসায়ীক সফলতায় ও রাজনৈতিক বিচক্ষণতায় ঈর্ষাণ্বিত হয়ে একটি বিশেষ মহল বন বিভাগের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সাথে যোগসাজে এই মিথ্যা বন মামলায় জড়ানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, মোঃ নাছির উদ্দিন ব্যবসায়িক কারনে লক্ষ লক্ষ টাকা বন বিভাগকে রাজস্ব দিয়ে থাকেন। অথচ তাকে কাঠ পাচারের মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় দেওয়া হয়েছে। একটি স্বার্থান্বেষী কুচুক্রী মহলের প্রভাবে ও দূর্নিতীবাজ বন কর্মকর্তা কর্তৃক বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপিত মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে বন মামলার (নং -০৭/২০১৮) প্রেক্ষিতে তাকে ত্রিশ লাখ টাকা জরিমানা ও ৩ বৎসের সশ্রম কারাদন্ড এবং অনাদয়ে আরো ৯ মাসের জেল প্রদান করেন। তবে ইতোমধ্যে তিনি গ্রেফতার হলেও জামিনে রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, বন মামলার এজাহারে গাছের বেড় ৭-০ ফুট উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে একটি ১০ ফুট ২ ইঞ্চি বেড়ের গাছ জব্দ আলামত হিসাবে প্রদর্শিত হয়েছে, যা চরম ষড়যন্ত্র। জব্দকৃত সেগুন কাঠের সরকারি গড় মূল্য বাস্তবে প্রতিফুটে ১৬০০ টাকা হলেও মামলার মেরিট তৈরী করার প্রমাণ হিসাবে ৫ হাজার টাকা প্রর্দশন করা হয়েছে, যা নাছির উদ্দিনকে বেআইনিভাবে সাজা প্রদানের জন্য সুবিধা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া জব্দকৃত কাঠের দৈর্ঘ্য ২৫ ফুট উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্ত গাছটি মাত্র ২২ ফুট ৫ ইঞ্চি। এইছাড়া ৮৬৬ ঘনফুট সেগুন গোল কাঠ অপসারণের বিষয়ে আদালতে তথ্য প্রদান করা হয়েছে, যা বাস্তবে অসম্ভব। দূর্গম পাহাড়ে ৮৬৬ ঘনফুট কাঠ অপসারণে যেখানে ৩০ জন শ্রমিকের নূন্যতম ৬০ দিন সময় লাগে সেখানে কিভাবে তিনি সংরক্ষিত বনে একা প্রবেশ করে নিজ হাতে সেগুণ গাছ কর্তন করতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও তার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জোর দাবী জানান। অন্যথায় আগামীতে কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে মুল্যবান সেগুন কাঠ চুরির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ। এই মামলায় আদালত তাকে ৩ বছর সাজা ও ৩০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। তবে বর্তমানে তিনি হাই কোর্ট থেকে মামলায় জামিনে রয়েছেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.