শুক্রবার ভোরে বান্দরবান জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে থানছি,রুমা,বান্দরবান সদর,এবং রোয়াংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়,সেনাবাহিনী,বিজিবি ও পুলিশ ক্যাম্পসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক ঘড়বাড়ির চালা উবে গিয়ে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভারী বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টির কারণে থানছি উপজেলায় তরমুজ,আম বাগান ও তামাকপাতা ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ উপজেলায় প্রায় ৩০০ একরের তরমুজক্ষেত এবং তামাক ক্ষেত পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চাষীরা।
জেলায় নির্মাণাধীন সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে বলে জানান রোয়াংছড়ি উপজেলা সদরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অংশৈ মং মারমা। অসংখ্য গাছপালা ভেংগে পড়ায় এসব উপজেলার নানাস্থানে যানবাহন চলাচল চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
থানচি বাজারের নুরুল আমিন জানান, ভোরে হঠাৎ করে বয়ে যাওয়া ঝড়ে তাদের বাড়ির টিনের চালা উড়ে যায়। এ সময় বৃষ্টিতে তাদের ঘরের যাবতীয় কিছু ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।
টিএন্ডটি এলাকার মহসিন মিয়া জানান, তার ঘরের টিন ঝড়ে উড়ে যাওয়ায় তিনি এখন খোলা আকাশের নীচে। ঘরে যে খাবার ছিল তাও নষ্ট হয়ে গেছে। এখনও পর্যন্ত কেউ সাহায্যের জন্য আসেননি ।
চাষী আবুল কালাম বলেন শিলা বৃষ্টিতে প্রায় আধা একর জমির তরমুজ চাষ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়া নি:স্ব হয়ে পড়েছেন।
থানছি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা এবং স্থানীয় সংবাদ কর্মী অনুপম মারমা জানান, ভোরে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টিপাতে উপজেলা সদরের একটি বিজিবি ক্যাম্প,থানা ভবন এবং প্রেস ক্লাবের চালা (টিনের চালা) উড়ে গেছে। এ উপজেলার বলিপাড়ায় চাকমা পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ২ শতাধিক ঘরবাড়ির চালা উড়ে গিয়ে বিধস্ত হয়েছে, আখসহ বিভিন্ন ফলদ বাগানেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
রুমা থানার ওসি মোঃ শরীফুল ইসলাম ও রুমা সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈমং মারমা জানায়, জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র বগালেক পাহাড়ে অবস্থিত সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের চালা উড়ে গেছে এবং একই এলাকার আশেপাশের ১০টি পাহাড়ি গ্রামের কাঁচাঘর ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
রোয়াংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যবামং মারমা জানান,উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ১০০ ঘরবাড়ির চালা উড়ে গিয়ে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সদর উপজেলার কালাঘাটার ফেন্সিঘোনায় ৫টি ঘর বিধস্ত হয়েছে ঘূর্ণি ঝড়ে।
জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে এবং দ্রুত সময়ে তাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা সম্ভব হবে।
এদিকে, ঝড়ো হাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ফলে গত দুদিন ধরে বান্দরবানবাসী বিদ্যুৎ বিহীন ছিলেন। মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ আসলেও তার স্থায়ীত্ব ছিল অল্প। অবশ্য শুক্রবার দিনের ১২ টার পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। গত দুদিনে বিদ্যুৎ না থাকায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন সাংবাদিকরা।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.