দৈনিক প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টার হরি কিশোর চাকমা বৃহস্পতিবার রাতে রাঙামাটি শহরের ভেদভেদী এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। বর্তমানে তাকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় চট্টগ্রামের মেহেদীবাগস্থ ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টার হরি কিশোর চাকমা নিজেই মোটর সাইকেল চালিয়ে রাঙামাটি শহরের রাজবাড়ী এলাকা থেকে রাঙ্গাপানিস্থ বাসায় যাচ্ছিলেন। এসময় শহরের ভেদভেদীস্থ রাঙামাটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট এলাকায় পৌছলে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দূর্ঘটনা ঘটলে তিনি গুরুত্বর আহত হন। পরে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কয়েকজন ছাত্র হেটে যাওয়ার সময় তাকে রাস্তার উপর পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত এগিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তাকে চট্টগ্রামে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। বর্তমানে তাকে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে হরি কিশেোর চাকমা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলের থেকে ছিটকে পড়ে আহত হয়েছেন, নাকি অন্য গাড়ী তাকে ধাক্কা দিয়েছিল কিনা তার প্রকৃত ঘটনা জানা যায়নি। তিনি সুস্থ হলে প্রকৃত দুর্ঘটনার কারণ জানা যাবে।
সিভিল সার্জন ডা.স্নেহ কান্তি চাকমা ও রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. মংক্য চিং সাগর জানান, সাংবাদিক হরি কিশোর চাকমা মাথায় ও চোখের নিচে আঘাত লেগেছে। তার দুই কান দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। তাই তার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রামে প্রেরণ করা হয়েছে।
তারা আরো জানান, মাথায় আঘাত পাওয়ায় হরি কিশোর চাকমা অবস্থা এখনো বুঝা যাচ্ছে না। সিটি স্কেনের পর তার মাথায় কোন স্থানে কতটুকু আঘাত লেগেছে তা বুঝা যাবে।
এদিকে, সাংবাদিক হরি কিশোর চাকমার দূর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অরুণ কান্তি চাকমা, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের কর্মকর্তারা,রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির কর্মকর্তারা,রাঙামাটি সাংবাদিক ফোরামের কর্মকর্তারাসহ রাঙামাটিতে কর্মরত সাংবাদিকরা, বন্ধু-বান্ধব, আত্বীয়-স্বজন ও বিভিন্ন পেশা শ্রেনীর লোকজন।
অপরদিকে, গুরুত্বর আহত সাংবাদিক হরি কিশোর চাকমাকে চট্টগ্রামে রেফার করা হলেও জরুরী ভিত্তিতে তাকে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় প্রায় দু`ঘন্টার যন্ত্রনাদায়ক অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়। জরুরী অ্যাম্বুলেন্সের জন্য সাংবাদিকসহ অন্যান্যরা মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল, এফপিএবি, পুলিশ হাসপাতাল, বিজিবি হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স জন্য বার বার চেষ্টা করলেও কোন অ্যাম্বুলেন্স-এর সাড়া মিলেনি। শেষ পর্ষন্ত কোন উপায় না দেখে রোগীর জীবন বাচানোর জন্য জরুরী ভিত্তিতে একটি মাইক্রোবাসে করে চট্টগ্রামে নিতে বাধ্য হয়। এতে সাংবাদিকসহ অন্যান্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, রাঙামাটির অবস্থা এতটাই খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে যে একজন মুমুর্ষ রোগীর জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা কোন স্থানে বাসবাস করছি?
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.