মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসত ভিটা ফেরত ও মালামালের উপযুক্ত ক্ষতিপূরনের দাবীতে বুধবার রাঙামাটিতে সংবাদ সন্মেলন করেছেন এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।
শহরের একটি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুস সবুরের কন্যা ফাতেমা বেগম। এসময় উপস্থিত ছিলেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের বড় মেয়ে নাজমা বেগম ও মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুস সবুরের স্ত্রী মরিয়ম বেগম।
সংবাদ সন্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, রাঙামাটি পৌর সভা অফিসের সীমানা প্রাচীরের বাইরের দক্ষিন পার্শ্বে মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল সবুরের পরিবারের একমাত্র মাথা গোজাবার শেষ আশ্রয়টুকু ঘর ছিল। কিন্তু গেল ১৩ আগষ্ট রাঙামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী ক্ষমতার জোরে ও জায়গার ব্যাপারে আদালতে আপীল মামলা চলা অবস্থায় বসতঘর ভেঙে দিয়ে তাদের ঘর বাড়ি গুড়িয়ে দিয়ে উচ্ছেদ করেন। এমনকি আইনের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে থানা ও জেল হাজতে পাঠাতে বাধ্য করেন। এ অবস্থায় বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে ঠিকানা বিহীন অবস্থায় কোন আবাসস্থল ছাড়াই মানবেতর জীবন করতে হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়,বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর সবুর পুরাতন রাঙামাটির উদ্বাস্তু নাগরিক। জীবনের তাগিদে রাঙামাটি পৌরসভায় স্বল্প বেতনে গাড়ি চালকের চাকুরী করেছেন। গেল গত ১৭ আগস্ট ২০০৯ সালে তিনি মারা যান। তিনি তৎকালীন ১৯৮৮ সালে বর্তমানে পৌর মার্কেট সংলগ্ন জায়গায় দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছেন। পরে মেয়র হাবিব পৌরসভার উন্নয়নে মার্কেট নির্মাণ করার উদ্যোগ নিলে ঘর-বাড়ির যাবতীয় ক্ষতিপূরণ দিয়ে পৌরসভার দক্ষিণ পার্শে¦ তথা পৌর সভার সীমানা প্রাচীরের বাইরে ২০০০ সালে এক টুকরো জলে ভাসা ভূমি প্রদান করেন। আর সেই সময় থেকে দীর্ঘ বছর বসবাস করে উক্ত জায়গাটির উন্নতি করেছেন।
এতে আরো বলা হয়, সম্প্রতি আমাদের সন্তানদের আয় দিয়ে বসবাসের নিমিত্তে একটি নতুন ঘর তৈরি করেন। কিন্তু ২০১৬ সালে হঠাৎ পৌর কর্তৃপক্ষ আমাদের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য মৌখিক নির্দেশ প্রদান করেন। ফলে বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় আদালতে মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।
সংবাদ সন্মেলনে বলা হয়, সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার। সরকার অনেক ছিন্নমূল মানুষকে পূর্ণবাসন করছে। কিন্তু রাঙামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী আমাদের কৌশলে উচ্ছেদ করেছেন। অতচ আদালতে মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে।
সংবাদ সন্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় ও পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের কাছে সুবিচারের দাবী করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসত ভিটা ফেরত ও মালামালের উপযুক্ত ক্ষতিপূরনের দাবী জানানো হয়েছে।
এদিকে পৌর সভা সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা সাইন বোর্ড ব্যবহারকারী দখলদারদের কারণে রাঙামাটি পৌর টাউন হল নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের বার বার দখল ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ এবং তাদেরকে পূর্নবাসন করে উপযুক্ত ক্ষতিপূরনের জন্যও উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এ সংক্রান্ত মামলা হলেও পরে তা আদালত খারিজ করে দিয়ে পৌর সভার পক্ষে রায় দেন। আদালতের নির্দেশে এবং একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.