খাগড়াছড়িতে সেতু-এমএলই প্রকল্প,জাবারাং কল্যাণ সমিতি`র কর্তৃক আয়োজিত এবং এফডিসি ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন`র অর্থায়নে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাতৃভাষায় শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন,অগ্রগতি,চ্যালেঞ্জ ও করণীয় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার(৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা পরিষদ হলরুমে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে জাবারাং কল্যাণ সমিতি`র সভাপতি এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা`র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রæ চৌধুরী অপু।
জাবারাং কল্যাণ সমিতি,সেতু-এমএলই প্রকল্প সমন্বয়ক বিনোদন ত্রিপুরা`র সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাবারাং কল্যাণ সমিতি,সেতু-এমএলই`র প্রজেক্ট অফিসার জোনাকি ত্রিপুরা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাতৃভাষায় শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন,অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নির্ধারণ বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা।
সেমিনারে উন্মুক্ত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ শিক্ষকের অভাবের ফলে এ শিক্ষা কার্যক্রম শিশুদের জন্য বোঝা হতে পারে। শিক্ষকদের দীর্ঘমেয়াদী প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না থাকায় এ জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। যা আমরা বিগত বছর গুলোতে দেখতে পেয়েছি। এ পাঠ্যক্রম প্রাক-প্রাথমিক থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হলেও অভিজ্ঞ শিক্ষকের অভাবে আলোর মুখ দেখছে না মাতৃভাষায় পাঠদান কার্যক্রম। ফলে সরকারের এ প্রশংসনীয় উদ্যোগটির কোনো সুফল পাচ্ছে না পাহাড়ের তিন ভাষাভাষী ত্রিপুরা,চাকমা ও মারমা শিক্ষার্থীরা।
বক্তারা আরো বলেন,শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়া রোধে ২০১৭ সালে স্ব-স্ব মাতৃভাষায় পাঠ্যক্রম অন্তর্ভুক্ত হলেও খাগড়াছড়িতে কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষকদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ না থাকায় এ উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার মত অবস্থা হয়েছিল। ২০১৭ সাল থেকে শুরু করে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি শিক্ষার্থীদের হাতে মাতৃভাষায় রচিত পাঠ্যপুস্তক তুলে দেয়া হয়। তারা স্ব-স্ব মাতৃভাষার বই পেয়ে শিক্ষার্থীরাও উচ্ছ্াসিত। কিন্তু শিক্ষক সঙ্কটে বঞ্চিত হচ্ছে এসব শিক্ষার্থীরা। তাই দ্রæত শিক্ষকদের দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার উপর জোড় দেন বক্তারা।
সেমিনারে প্রধান অতিথি খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু বলেন শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের জন্য আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করে যেতে হবে। বিদ্যালয়ের কোমলমতী শিক্ষার্থীরা পহেলা জানুয়ারি থেকে তাদের নিজ নিজ মাতৃভাষা সংবলিত বই হাতে পাবে।তারা তাদের স্ব-স্ব মাতৃভাষায় পাঠদান করতে পারবে।এর জন্য স্ব-স্ব মাতৃভাষায় নিয়োগকৃত শিক্ষকদের দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবেন বলে জানান তিনি।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ বশিরুল হক ভূঞা, জেলা পরিষদের সদস্য ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের আহ্বায়ক নিলোৎপল খীসা,জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহের ইয়াসমিনসহ বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্ব স্ব মাতৃভাষার প্রশিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
---হিলবিডি২৪/সম্পদনা/এ,ই