করোনাকালীন সময়ে রাঙামাটির দুর্গম এলাকায় হতদরিদ্রদের মাঝে জরুরী স্বাস্থ্য সেবা, খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাঙামাটিতে এডভোকেসী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইউকে এইড বাংলাদেশ ও স্টার্ট ফান্ডের সহায়তায় এবং আশিকা ডেভেলপম্যান্ট এসোসিয়েটস এর উদ্যোগে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক অমিতাভ পরাগ তালুকদার, জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা, জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা, আশিকা ডেভেলপম্যান্ট এসোসিয়েটস এর নির্বাহী পরিচালক বিপ্লব চাকমা। সভায় জনপ্রতিনিধি, সুবিধাভোগীসহ অন্যান্যরা অংশ নেন। পরে আসন্ন দূর্যোগ মোকাবেলায় নানিয়ারচর উপজেলার জন্য হেন্ড মাইক, রেইন কোর্ট, গামবুট, টচ লাইন সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়।
তিনি আরো বলেন, দুর্গম সাজেকে হাম আক্রান্ত এলাকায় মেডিকেল নিয়ে সেখানকার আক্রান্তদের চিকিৎসা,খাদ্য সরবরাহ ও নিরাপদ পানি ব্যবস্থা করেছে। একইভাবে জুরাছড়ি উপজেলার দুমদুম্যা ইউনিয়নে অসহায় পরিবারের খাদ্য সরবরাহ করেছে আশিকা অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। ভভিষ্যতেও প্রশাসনের সাথে সমন্বয় রেখে তারা কাজ করবে।
তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, দুর্গম সাজেক এলাকায় পানির সংকট। তাই সেখানে দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্প নেয়া যায় কিনা। সেখান ঝর্না পানিগুলোকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে নিরাপদ পানি পাওয়া যায়। তাছাড়া নিরাপদ পানির জন্য গভীর নলকূপ বসানো যায় কিনা তার চিন্তাভাবনা করতে হবে।
জুরাছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা বলেন, সাজেকে এখন গাড়ীতে করে যাওয়া যায়। কিন্তু দুমদুমা হেটে যাওয়া ছাড়া কোন পথ নেই। এতে এক সপ্তাহ লেগে যায়। এই দুর্গম এলাকায় আশিকা খাদ্য সরবরাহ করেছে অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার। তিনি আরো বলেন, দুমদুম্যাতে প্রতি বছর খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়। এক কেজি চাউল ৮০ টাকায় বিক্রি হয় সেখানে। লোকজন জুমে উৎপাদিত ধান চাউল বিক্রি করে দেয় টাকার জন্য। তাই আগামীতে সেখানকার জন্য কোন প্রকল্প নেয়া হলে রাইস ব্যাংক করে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।
উল্লেখ্য, করোনাকালীন সময়ে ইউকে এইড বাংলাদেশ ও স্টার্ট ফান্ডের অর্থায়নে আশিকা ডেভেলপম্যান্ট এসোসিয়েটস এর উদ্যোগে জুরুরী ফান্ড হিসেবে রাঙামাটির দুর্গম সাজেকের হাম আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ৭শ হতদরিদ্র পরিবারকে খাদ্য সহায়তা, নিরাপদ পানির ব্যবস্থা এবং জুরাছড়ির দুর্গম দুমদুম্যা ইউনিয়নে ৩শ পরিবারকে জরুরী খাদ্য সহায়তা ও স্বাস্থ্য সেবা দেয়। এছাড়া প্রকল্পে জেলার ১০(দশ) উপজেলায় ৭০০(সাত শত) পরিবারকে কোভিড-১৯ প্রতিরোধমূলক ওয়াশ কিট উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিতরন করা হয়। তাছাড়াও প্রত্যেক উপজেলার গুরুত্বপূর্ন স্থান সমূহে ডিস্টেন্ট সার্কেল তৈরি, কিøনিং কর্ণার স্থাপন, সচেতনতামূলক ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেট, স্টিকার বিতরন, মাইকিং, এবং বিল বোর্ড স্থাপনের কাজ করা হয়।
প্রত্যেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বেসরকারী ক্লিনিক গুলোতে ২৪টি নেবুলাইজার এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার সেট বিতরন করা হয়। উক্ত প্রকল্পের আওতায় সাজেক এলাকায় হামের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার জন্য মেডিকেল টিমের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং হাম আক্রান্ত ২০০ (দুইশত)পরিবারকে ১০০০/-(এক হাজার টাকা) করে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.