• Hillbd newsletter page
  • Hillbd rss page
  • Hillbd twitter page
  • Hillbd facebook page
সর্বশেষ
বিলাইছড়িতে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে হিল ফ্লাওয়ারের কুইজ প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা                    পরিবেশ রক্ষায় বরকলে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের ৭২০০ গাছ রোপণ                    বরকলে ছোট হরিণা জোনের উদ্যোগে সহায়তা প্রদান                    হিজাছড়ি আর্যরত্ন বন বিহারে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত                    ধর্ম্মোদয় বৌদ্ধ বিহারে ৪০তম দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত                    জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করারসহ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের দাবী                    নানিয়ারচরে সেনা অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ দুই ইউপিডিএফ সদস্য আটক                    পাহাড়ে শান্তি সম্প্রীতি সৌহার্দ্যপূর্ন সম্পর্ক ও উন্নয়ন চাই-পার্বত্য উপদেষ্টা                    সম্প্রীতির বন্ধনে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক সাথে থাকতে চাই-পার্বত্য উপদেষ্টা                    সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে মানববন্ধন                    রাঙামাটিতে কঠিন চীবর দানোৎসবে নিরাপত্তায় থাকবে আইন-শৃংখলা সেনাবাহিনী                    নানিয়ারচরে নৌকা ডুবিতে নিখোজ দুই কলেজ ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার                    লংগদুতে ঝড়ে নৌকা ডুবে মা ও দু্ই ছেলের মৃত্যু                    বিলাইছড়িতে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করলেন জোন কমান্ডার                    ইউপিডিএফের অস্ত্রধারীদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে-ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক                    খাগড়াছড়ির সহিংসতা ঘটনায় রাঙামাটির এনসিপির নিন্দা ও প্রতিবাদ                    গুইমারায় নিহত ৩জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর,১৪৪ ধারা বলবৎ                    রাঙামাটিতে রাজনৈতিক,ধর্মীয়,সামাজিক নেতৃবৃন্দের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়                    খাগড়াছড়ির উদ্ভূতপরিস্থিতি মোকাবেলায় পাহাড়ি-বাঙ্গালীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান-পার্বত্য উপদেষ্টা                    পাহাড়ে ফুটবলে বড় আসর ড.রামেন্দু শেখর দেওয়ান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন                    শুক্রবার পর্দা উঠছে ড.রামেন্দু শেখর দেওয়ান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট                    
 
ads

পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলনের বিবৃতি
সাঙ্গু-মাতামুহরী অভয়ারণ্য ও সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি

ডেস্ক রিপোর্ট : হিলবিডি টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 08 Nov 2020   Sunday

পার্বত্য বান্দরবানের সাঙ্গু-মাতামুহরী অভয়ারণ্য ও সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ধ্বংসের প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তার বন্ধের কার্যকর ও বন ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন। 

 

রোববার পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলনের সভাপতি গৌতম দেওয়ানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই এই দাবী জানানো হয়েছে।


বিবৃতিতে দাবী উল্লেখ করা হয়, বান্দরবান পার্বত্য জেলার থানচি উপজেলায় শঙ্খ বা সাঙ্গু নদীর উৎপত্তিস্থলে সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চল অবস্থিত। ১৮৮০ সালে সংরক্ষিত ঘোষিত এ বনাঞ্চল দেশে একমাত্র কুমারী (ভার্জিন) বনাঞ্চল হিসেবে পরিচিত। ২০১০ সালে বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী বনাঞ্চলের অংশ নিয়ে সাঙ্গু-মাতামুহুরী অভয়ারণ্য সৃষ্টি করা হয়। এটি ইন্দো-বার্মা হটস্পটের জৈব-পরিবেশগত অঞ্চলে অবস্থিত। ২০০০ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ কনজারসেন অফ নেচার(আইইউসিএন) করা হয়। ক্রিয়েটিভ কনজারভেসন এলাইন্স এ বনাঞ্চলে পরিচালিত এক জরিপে দেশের বনাঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ও বিলুপ্তপ্রায় বন গয়াল বা গাউর, সোনালী বিড়াল, মরমর বিড়াল, লামচিতা, চিতাবাঘ, বাঘ, সম্বর, মার্বেলকেট, বন্যকুকুর, লেঙ্গুর, সূর্য ভালুক, কালো ভালুক, ময়ূর, বৃহৎ আকৃতির চার প্রজাতির কচ্ছপের অস্তিত্ব ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পাওয়া গেছে।


জরিপে সাঙ্গু অঞ্চলকে সবচেয়ে বেশি প্রাণবৈচিত্রের আধার হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, এখনও এ বনাঞ্চলে ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৪৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ১৯ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১১ প্রজাতির বিরল পাখির অস্তিত্ব রয়েছে। আমাদের চারপাশের অনেক নেতিবাচক খবরের মধ্যে এটি একটি স্বস্তিদায়ক সংবাদ এজন্য যে, বাংলাদেশে একমাত্র এ বনাঞ্চলেই উপরোল্লেখিত বিলুপ্ত ও বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীগুলোর আবার আবির্ভাব ঘটেছে।


বিৃবতিতে সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারিরা বন বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে সাঙ্গু বনাঞ্চল ধ্বংসের মহোৎসবে মেতে উঠেছে অভিযোগ করে বলা হয়, এ মুহূর্তে সাঙ্গু সংরক্ষিত বনাঞ্চলে আন্ধারমানিক থেকে ইয়াংরে, মুরুক্ষ্যং, লংভং, লিক্রিসহ বিভিন্ন স্থানে ৭০ থেকে ৮০ দলে বিভক্ত হয়ে এক হাজারের অধিক কাঠুরিয়া পেট্রোল চালিত গাছ কাটাযন্ত্র নিয়ে মূল্যবান গাছ গর্জন, গোদা, চাপালিশ, চম্পাফুল, বৈলামসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে রদ্দা করার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। যারা এ অবৈধ কাঠ কাটা ও পাচার কাজে নিয়োজিত তারা হলেন জামাল সওদাগর, দোহাজারী চট্টগ্রাম, নাজিম সওদাগর, দোহাজারী চট্টগ্রাম, শহীদুলক হক প্রকাশ শহীদ মাষ্টার, বালাঘাটা, বান্দরবান (বালাঘাটা বিলকিছ বেগম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক), মহিউদ্দিন সওদাগর, বান্দরবান, লোকমান সওদাগর, সালাউদ্দিন সওদাগর, বান্দরবান ও জাহাঙ্গীর সওদাগর ওরফে লেদা জাহাঙ্গীর।

 

থানচি ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল সংলগ্ন স্থানীয় সহযোগীরা হলেন এমংউ মার্মা, থানছি বাস ষ্টেশন, ক্রাপ্রু অং মার্মা, থানছি মংপাড়া, শৈবাথোয়াই মার্মা, থানছি বাজার। সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে বসবাসরত কাঠ পাচারকারীদের সহযোগীরা হলেন শৈক্যচিং মার্মা, বড়মদক , মইশৈই মার্মা, মুই শৈ থুই মার্মা, চেয়ারম্যান, ১নং রেমাক্রী ইউনিয়ন পরিষদ,চাসিংমং মার্মা, বড়মদক , উসানু মার্মা, বড়মদক, পাইলাপ্রু মার্মা, বড়মদক, জিনাঅং মার্মা, বড়মদক, হ্লাসিংচিং, বড়মদক,বাতমাই মার্মা, বড়মদক, ক্রাইচিং অং মার্মা, বড়মদক, উবামং মার্মাসহ আরও অনেকে।


বিবৃতিতে আরো অভিযোগ করা হয়, থানছি রেঞ্জ কর্মকর্তা জনাব আব্দুল মতিন সরকার কাঠ ব্যবসায়ীদেরকে সকল প্রকার সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। বনবিভাগের আরও কতিপয় কর্মকর্তার সঙ্গে কাঠ পাচাকারীদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যোগসাজস রয়েছে মর্মেও অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে আরও জানা যায়, কাঠপাচারকারীরা চারটি পথে কাঠুরিয়াদের সাঙ্গু সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নিয়ে গেছে তা হলো থানচি উপজেলা সদর হয়ে, আলীকদম থেকে তিন্দু হয়ে,আলীকদম থেকে বড়মদক হয়ে ও আলীকদম পোয়ামুহুরি ও লিক্রী হয়ে।

 

গাছ কাটার পর ওই চারটি পথে পাঁচটি উপায়ে কাঠগুলো পাচার করা হয়। তা হলো বনবিভাগসহ পাচারে বাধার কারণ হতে পারে এমন সবাইকে ম্যানেজ করে, বনবিভাগের সঙ্গে যোগসাজস করে চোরাই পথে, বনবিভাগকে দিয়ে জব্দ করে নীলামে দিয়ে,জব্দ করা কাঠের নীলামের পারমিটে,জোত পারমিট বৈধ করে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাঠ পাচার করা হবে। বান্দরবান পার্বত্য জেলায় দু’টি সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চল সাঙ্গু ও মাতামুহুরি। আলীকদমে অবস্থিত মাতামুহুরি বনাঞ্চল ইতিমধ্যে প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।


বিবৃতিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন গভীর উদ্বিগ্ন বলে উল্লেখ করে বলা হয়, দেশের একমাত্র কুমারী বনাঞ্চল ৮২ হাজার একরের সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চলকে কোন কোন মহল পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে। পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের কথা বলা হচ্ছে এ কারণে যে, থানচি থেকে এ বনাঞ্চলে পৌঁছুতে বন-বিভাগ, পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর কম করে হলেও ১২ থেকে ১৪টি চেকপোস্ট অতিক্রম করতে হয়। এত সুরক্ষিত অবস্থান থেকে এতগুলো চেকপোস্ট অতিক্রম করে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ পাচার হওয়ার বিষয়টিতে সন্দেহ করার যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে।

 

সাঙ্গু নদীর উৎপত্তিস্থলের এ প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ধ্বংস হলে পরিবেশের বহুমাত্রিক বিপর্যয় দেখা দেবে। সাঙ্গু নদীর পানি কাঠামোর উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এমনকি পানি শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দেবে। পানির সংকটে সমগ্র উপত্যকা বসবাসের অনুপযোগী হবে, প্রাণীবৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কারণ বন-বাগান সৃষ্টি করা যায়, কিন্তু প্রাকৃতিক বনাঞ্চল সৃষ্টি করা যায় না। এ জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চল রক্ষার জোর দাবি জানাচ্ছে।


বিবৃতিতে অবিলম্বে সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে বৃক্ষ নিধনে নিয়োজিত কাঠুরিয়াদের সরিয়ে নেওয়া, কাঠ পাচারের সঙ্গে জড়িত ও কাঠুরিয়া নিয়োগকারীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান,কাঠ পাচারের সঙ্গে জড়িত বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা, সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চল সংলগ্ন বড়মদক, ছোট মদক, রেমাক্রি ও তিন্দু এলাকায় জোত পারমিট ও কাঠ পরিবহন বন্ধ করা, সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চল সংলগ্ন বড়মদক, ছোট মদক, রেমাক্রি ও তিন্দু এলাকায় জব্দকৃত অবৈধ কাঠ নীলামে বিক্রী না করে প্রয়োজনে ধ্বংস করা ও সাঙ্গু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চল রক্ষায় উচ্চ পর্যায়ে একটি মাল্টিসেক্টরেল তদন্ত কমিটি করে জরুরিভিত্তিতে তদন্তের জরুরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জোর দাবী জানানো হয়েছে।


বিবৃতিতে বলা হয়, সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে কাঠুরিয়া নিয়োজিত করে উপরোল্লেখিত পাচারকারীরা কাঠ কাটা শুরু করেছে। বনবিভাগের থানচি রেঞ্জ কর্মকর্তার সঙ্গে কাঠব্যবসায়ী বা পাচারকারীরা কাঠ কাটার পর পাচারের উদ্দেশ্যে উপরে বর্ণিত ছক তৈরি করেছে। গত ২৮ অক্টোবর বান্দরবান জেলা শহরে বন বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাঠব্যবসায়ীদের একটি বৈঠক হয়েছে। এতে সিদ্ধান্ত হয়েছে- কাঠব্যবসায়ীরা হাজার খানেক ফুট কাঠ জব্দ করানোর জন্য সাজিয়ে রাখবে। বনবিভাগের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে সাজিয়ে রাখা ঐ কাঠ উদ্ধার করবেন। তদনুসারে গেল ৫ নভেম্বর বনবিভাগের কর্মকর্তারা সিঙ্গাপা মৌজা থেকে ১,০২৬ ফুট জব্দ করেছেন। জব্দকৃত কাঠ জব্দকৃত স্থানে নীলাম দেওয়া হবে। নীলামের বৈধ পারমিটে সাঙ্গু বনাঞ্চলের কাঠ অবৈধভাবে পাচার করা হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

ads
ads
আর্কাইভ