পাহাড়ে বিভিন্ন স্থানে গ্রাফিতি অংকনে বাঁধা ও মুছে দেওয়ার অভিযোগ করে তার প্রতিবাদে শুক্রবার রাঙামাটিতে বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ করেছে পাহাড়ী শিক্ষার্থীরা।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বরের সামনে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী ছাত্র সমাজের ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে রাঙামাটি সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী কিকো দেওয়ানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য দেন কর্ণফুলী সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী উসাইমং মারমা, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ক্যাচিনু মারমা, সমাজকর্মী নবশীষ চাকমা ও চিক্কো তালুকদার। এর আগে একটি বিশাল বিক্ষোভ-মিছিল শহরের জিমনেসিয়াম মাঠ থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরের সামনে সমাবেশ করা হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলা থেকে এক হাজারেরও অধিক পাহাড়ী শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্রতিবাদী ফেষ্টুন ও ব্যানারনিয়ে অংশ নেন। এসময় এক দেশের দুই নীতি চলবে না মানবো না, এক হও লড়াই করো, আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করো, এসো ভাই এসো বোন লড়াই করো, ভূমি অধিকার দিতে হবে ইতাদি শিক্ষার্থীরা শ্লোগান দেয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, সারাদেশে বৈষম্য দুর হলেও পাহাড় থেকে এখনো বৈষম্য দুর হয়নি। পাহাড় এখনো স্বৈরাশাসকের কাছ থেকে মুক্ত হতে পারেনি। সমতলের মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ ফেলেও পাহাড়ের মানুষ পায়নি ও সেই স্বাধীনতার স্বাদ অনুভবও করতে পারছে না। সমতল ও পাহাড়ের আদিবাসীদের নায্য অধিকার ফিরে পায়নি।
পাহাড় ও পাহাড়িদের নিয়ে নিত্য নতুন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে দাবী করে শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, পাহাড়ে পর্যটনের নামে ভূমি বেদখল করে পাহাড়িদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে ভোটার তালিকা করে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন দেওয়া হয়নি। নির্বাচন না হওয়া এসব জেলা পরিষদগুলো অনিয়মের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কারণে আদিবাসীদের মেধা শূণ্য করা হচ্ছে। পাহাড়ের মানুষ যুগ যুগ ধরে বাক স্বাধীনতায় অবরুদ্ধ এবং তারা তাদের মৌলিক ও রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পায়নি।
খাগড়াছড়িতে গ্রাফিতি অংকনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও গ্রাফিতি মুছে দেওয়ার অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা আরো বলেন,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানের অংশ হিসেবে খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটিতে গ্রাফিতি অংকন করতে গিয়ে বাঁধা প্রদান ও গ্রাফিতি মুছে দেওয়া হয়েছে। কল্পনা চাকমার গ্রাফিতিও মুছে দেওয়া হয়েছে। গ্রাফিতি অংকনে বাধাঁ ও মুছে দেওয়ার নিন্দা ও ঘৃনা জানিয়ে আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকারসহ নায্য অধিকারের দাবী পূরণ না হওয়া পর্ষন্ত সবাইকে একত্রিত হয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য ছাত্র-জনতাকে আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.