রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদের টোল আদায় কেন্দ্রের ৭৭ লক্ষ দশ হাজার টাকার দরপত্র প্রকাশের গোপনীয়তা ও ঠিকাদারদের নামে দরপত্র ক্রয়ের অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা। ঠিকাদারকে নামে দরপত্র ক্রয় করা হলেও ঠিকাদাররা তা ক্রয় করেননি বলে দাবী করেছেন। সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে এ কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে এ অভিযোগের বিষয়ে রাঙামাটি উপজেলা সদর উপজেলা কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।
ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও মানিকছড়ি এলাকায় বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহন থেকে টোল আদায়ের পরিচালনার জন্য চলতি মাসের ৭ মার্চ নতুন করে ৭৭ লক্ষ দশ হাজার টাকার দরপত্র প্রকাশ করে রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ। স্থানীয় দুটি পত্রিকার মাধ্যমে দরপত্রের বিজ্ঞপ্তিটি দেওয়া হয়। এ দরপত্রে সিডিউল সংগ্রহ করে ৬টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টায় ছিল আহŸান করা দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় আর একই দিনে দরপত্র বক্স খোলার সময় ছিল দুপুর ২ টায়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দরপত্রের বক্স খোলা হয়নি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বায়োজিদ এন্টার প্রাইজ, মমতাজ স্টোর, তারিক হোসেন, মোর্শেদ আলম, উর্মি চাকমা। তবে দরপত্র সংক্রান্ত বিষয়ে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের গিয়ে জানতে চাওয়া হলে ইউএনও এর অনুমতি ছাড়া কোন কিছু তথ্য দিতে দেওয়া যাবে না জানানো হয়েছে।
ঠিকাদার উর্মি চাকমার স্বামী সাব্যসচী চাকমা বলেন, গত দুই বছর তার স্ত্রীর লাইসেন্স দিয়ে মানিকছড়ি টোল আদায়ের দরপত্রের কাজ পেয়েছেন। কিন্তু উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তারা গোপনে তার নামে সিডিউল সংগ্রহ করেছেন। অথচ তিনি কোন সিডিউল সংগ্রহ করেননি। গেল বছর ১১ টি সিডিউল বিক্রি হয়েছিল। এবারে গোপনীয়তার সাথে এ কাজ করায় অনেক ঠিকাদার সিডিউল ক্রয় করতে পারেনি। এর কারণে সরকার রাজস্ব হারিয়েছে। তিনি আরো বলেন, তার স্ত্রীর ঠিকাদারী লাইসেন্স নিয়ে বর্তমানে মানিকছড়ি টোল আদায় কেন্দ্রটি পরিচালনা করছেন তিনিসহ মো. খালেদ মাসুদ ও মো. শওকত আলম।
অপর ঠিকাদার মোঃ খালেদ মাসুদ ও মোঃ শওকত আলম জানান, আমরা এ টোল আদায় কেন্দ্রের কাজ করছি গত দুই বছর ধরে। নতুন অর্থ বছরে কবে দরপত্র আহবান করা হবে এ নিয়ে তারা উপজেলা পরিষদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলেন। তাদের অভিযোগ এ বিষয়ে অফিসে খোঁজ নেওয়ার পরও তাদেরকে কোন তথ্য দেওয়া হয়নি। তাদের লাইসেন্সের নামে সিডিউল সংগ্রহ করা হয়েছে অথচ তারা কেউই জানেন না। আবার পত্রিকায় কখন বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয় সেটাও তারা জানেন না। তারা আরো বলেন, এ দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে অনলাইনে টেন্ডার কাজ করতে হবে। এভাবে ম্যানুয়েল টেন্ডার আহবানের কাজ অব্যাহত থাকলে অনিয়ম বন্ধ হবে না। এ দরপত্র বাতিল করে অনলাইনের মাধ্যমে পুন দরপত্রের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দাবী করেছেন তারা।
রাঙামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সারের সাথে এ বিষয়ে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। তার পিএ টু ইউএনও সুজন দে জানান, ইউএনও রোববার অন্যত্র বদলী হয়ে যাচ্ছেন। তার নতুন কর্মস্থলে চলে যাবেন বলে তিনি খুব ব্যস্ত রয়েছেন।
দরপত্র কমিটির কোন তিনি কোন সদস্য নন বলে দাবী করে রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শহীদুজ্জামান রোমান বলেন, এ বিষয়ে তিনি অবগত নন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.