খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় করোনা ভাইরাসের আতংকের মাঝে বাড়ছে হামে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। উপজেলার দুর্গম রথিচন্দ্র কারবারী পাড়ার ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে হাম।
সোমবার সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় হামে আক্রান্ত ২০ শিশুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্ত শিশুদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়াও আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার পাশাপাশি দুর্গম এই পাহাড়ী গ্রামের সুস্থ্য শিশুদের হামের টিকা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এদিকে হামের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় দুর্গম রথিচন্দ্র কারবারী পাড়ার মানুষের মাঝে আতংকের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। গত ২২ মার্চ থেকে দুর্গম এই পাহাড়ী গ্রামে দেখা দেয় হামের প্রাদুর্ভাব। এপর্যন্ত এক শিশুর মৃত্যুসহ ২১ শিশু হামে আক্রান্ত হয়েছে।
দুর্গম রথিচন্দ্র কারবারী পাড়ার দিনমজুর অমি রঞ্জন ত্রিপুরা জানান, আমার ছেলে মেয়ে দুজনই হামে আক্রান্ত হয়েছে। তারমধ্যে চিকিৎসার অভাবে গত শনিবার মেয়ে ধনিতা ত্রিপুরা মারা গেছে। তাই ছেলেকে বাচানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। তিনি আরও জানান, কাজ না করলে সংসার চলে না। বাড়িতে চাল ডাল কিছুই নেই। একদিকে করোনা ভাইরাসের কারনে কাজকর্ম বন্ধ। অন্যদিকে হামের প্রাদুর্ভাব। এমবস্থায় কি করবো বুঝতে পারছি না। পাড়ার প্রতিটি পরিবার আতংকের মাঝে দিন কাটাচ্ছে বলে জানান তিনি।
ইউপি সদস্য ঘনশ্যাম ত্রিপুরা জানান, হামে আক্রান্ত রথিচন্দ্রপাড়ার ২০ শিশুকে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিকিৎসার পাশাপাশি রোগী ও অভিভাবদের খাবারও দিচ্ছে সেনাবাহিনী। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। তিনি আরও জানান, রথিচন্দ্রপাড়ার প্রতিটি পরিবার দিনমজুর। তাই করোনা ভাইরাসের কারনে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় দুর্গম এই পাহাড়ী গ্রামে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। জরুরী ভিত্তিতে ত্রানসামগ্রী বিতরণ করা না হলে খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারন করতে পারে বলে জানান তিনি।
সেনাবাহিনীর মেডিকেল অফিসার ক্যাপ্টেন আহসান হাবীব জানান, হামে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে দীঘিনালা সেনাজোনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও অভিভাবকদের মাঝে খাবার তিরণসহ চিকিৎসার স্বার্থে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তনয় তালুকদার জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ পর্যন্ত আক্রান্ত ২০ শিশু ভর্তি হয়েছে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে তাদের মধ্যে কেউই আশংকাজনক নয়। আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ রথিচন্দ্র পাড়ার সুস্থ্য শিশুদের হামের টিকা দেয়ারও উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথম ভর্তি হওয়া পান্তই ত্রিপুরা এখন অনেকটাই সুস্থ্য বলে জানান তিনি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.