আগামী ২৮ মার্চ থেকে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের পাঠদান কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে বুধবার জেলা প্রশাসন, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সামাজিক প্রতিনিধিদের নিয়ে এক জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সন্মেলন কক্ষে এক জরুরী বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ফিরোজা বেগম চিনু। জেলা প্রশাসক মোঃ সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, রাঙামাটি সদর সেনা জোন কমান্ডার মানিক শামসু্িদ্দন মোহাম্মদ মঈন, সিভিল সার্জন ডাঃ স্নেহ কুমার চাকমা, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সাইফ উদ্দিন,আহম্মেদ, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ টিপু সুলতান, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মানিক লাল দেওয়ান, সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে প্রমুখ।
বৈঠকে সাংসদ ফিরোজা বেগম চিনু পার্বত্য জনগনের কাছে সন্ত্রাসী দল হিসাবে চিহ্নিত না হয়ে সরকারের ভালো কাজে সহযোগিতা করে পার্বত্য অঞ্চলের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল কলেজের বিরোধীতাকারীদের অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, সরকার পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করতে খুবই আগ্রহী। সরকারের ভালো কাজ গুলোকে কোন ভাবে বিরোধীতা না করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে পার্বত্য অঞ্চলের জনগন উপকৃত হবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ সামসুল আরেফিন বলেন, মেডিকেল কলেজ রাঙামাটিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এটি আমাদের পার্বত্য বাসীর জন্য অনেক বড়ো পাওয়ায়। সঠিক সময়ে ক্লাস শুরু করতে না পারায় এই কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা অনেক পিছিয়ে আছে। এই ক্ষতি শিক্ষকদের পুড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি সরকারের একটি বড় অর্জণ। মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে কোন সংশয় হবে না। তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের নিরাপত্তা শুধু সরকার দিবে না পার্বত্য অঞ্চলের জনগন শিক্ষক ও ছাত্রীদের নিরাপত্তা দিবে।
পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান জানান, সামন্য ইস্যু নিয়ে পার্বত্য অঞ্চলে বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে একটি মহল। তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজ নিয়ে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা মেনে নেয়া হবে না। তিনি বলেন, যে বা যারা মেডিকেল কলেজ নিয়ে বিশৃঙ্খলা করবে সে যে দল বা যে গোষ্ঠীরই হোক না কনে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, মেডিকেল কলেজ পার্বত্য অঞ্চলের একজন একটি অহংকার। এই মেডিকেল কলেজের মাধ্যমে আমাদের এই অঞ্চলের স্বাস্থ্য সেবার মান দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। বক্তারা বলেন, কোন ধরনের বিরোধিতা করে নয় সহযোগিতার মাধ্যমে এই কলেজের সাফল্য কামনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য, সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিসহ অন্যান্য কয়েকটি সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক অগ্রগতি না হওয়া পর্যন্ত রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ স্থাপনসহ যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিতের দাবি জানিয়ে আসছিল। সর্বশেষ গত ১০ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী টেলিকনফারেন্সের মাধ্যেমে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এর প্রতিবাদে ওই দিন রাঙামাটি জেলায় অবরোধের ডাক দেয় পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ। এ অবরোধকে কেন্দ্র করে শহরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার রুপ নেয় এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ১৪৪ এবং পরবর্তীতে কারফিউ জারি করা হয়। এর পর থেকে মেডিকেল কলেজের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.