রাঙামাটির ধনপাতা বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো বৌদ্ধ ধর্মবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দানোৎসব।
শুক্রবার সকালে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন ও ভিক্ষু সংঘকে ফুলের তোরা দিয়ে বরণ করে নেন পুণ্যার্থীরা। এর পর বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘদান ও ভিক্ষু সংঘের ধর্ম দেশনা, অষ্টপরিস্কার দান, কল্পতরু দান, হাজার বাতি দান, আকাশ প্রদীপ দানসহ নানাবিধ দান ও উৎসর্গসহ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়।
দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব উপলক্ষে আয়োজিত ধর্মসভায় পূর্ণার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধান ধর্মদেশনা প্রদান করেন খাগড়াছড়ি আলুটিলা ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যাপক করুনাবীর মহাস্থবির।
ধর্ম সভায় এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ধনপাতা মৌজার হেডম্যান রুপায়ন চাকমা,উপাশক উপাশিকা পরিষদের দায়ক সুভাষ বসু চাকমা,সাবেক মেম্বার স্বপন দত্ত চাকমা,জীবতলী ইউনিয়নের মেম্বার দয়াময় চাকমা,ধনপাতা বন বিহার পরিচালনা পরিষদের সহ সাধারন সম্পাদক চিরন বিকাশ দেওয়ান।
ধর্মসভা ও পঞ্চশীল গ্রহণের পর চীবর দানের মাধ্যমে ‘মুক্তির অহিংসা বাণী ছড়িয়ে যাক মানুষে মানুষে এবং সামনের দিনগুলোতে শান্তি ফিরে আসুক ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের’ এমন প্রার্থনার মধ্যদিয়ে পূণ্যার্থীরা বৌদ্ধ ভিক্ষুসংঘকে চীবর দানের মধ্যদিয়ে শেষ হয় চীবরদান উৎসব। আর বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় প্রদীপ প্রজ্বলন ও ফানুস বাতি উত্তোলন।
এদিকে, সকাল থেকে থেকে বিহার প্রাঙ্গনে আসতে থাকে প্রত্যন্ত এলাকার ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ। চীবর দান উপলক্ষে বিহারের আশে পাশে বসে মেলা। উৎসবে মেতে উঠেন বৌদ্ধ ধর্মবালম্বী ছাড়াও বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ।
উল্লেখ্য, মহামতি বুদ্ধের প্রজ্ঞাদীপ্ত শিক্ষা ‘বর্ষাবাস তথা বর্ষাব্রত’ পালনের সমাপনী অনুষ্ঠান শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা এবং দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসব হলো বৌদ্ধদের অতি পবিত্র ও মাহাত্ম্যপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এ পূত-পবিত্র অনুষ্ঠান-উৎসবের মধ্যদিয়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা তথাগত গৌতম বুদ্ধের পরম কল্যাণময় শিক্ষা চর্চার ব্রত হয়। হিংসা ক্রোধ ও মোহের বদলে প্রেম দয়া ও ক্ষমায় মানুষের কল্যাণে তপস্যা ভিক্ষুদের। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্রকে বলা হয় চীবর। তাই এ বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের পরিধেয় বস্ত্রের অভাব দুর করতেই কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান। তাই বৌদ্ধদের কাছে প্রবারনা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান অত্যন্ত গুরুত্ববহ পুণ্যানুষ্ঠান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.