এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বৃহত্তম শিশু সমাবেশে জুনিয়র অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ব্রীজ কিডস্ প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণের বিরল সুযোগ পেয়েছে রাঙামাটির শিশু নৃত্য শিল্পী রাইন চাকমা ।
জাপানে ফুকুওয়াকা শহরে ১১দিনব্যাপী চলবে এশিয়ান প্যাসিফিক চিলড্রেন কনভেনশন। গত শনিবার বাংলাদেশের ৬ সদস্য বিশিষ্ট শিশু সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দলটিও শিশু সমাবেশে অংশ নিতে জাপান যায়। ওই শিশু প্রতিনিধি দলে রয়েছে রাঙামাটির রাইন চাকমা। বিশ্বের নানা প্রান্তের শিশুদের মধ্যে পারষ্পারিক সাংস্কৃতিক ভাব বিনিময়ের মাধ্যমে বিশ্বশান্তি ও বন্ধুত্ব স্থাপনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এ শিশু সমাবেশ আয়োজন করা হয়। সারাবিশ্বের ৫৭টি দেশ থেকে শিশুরা বৃহত্তম এ শিশু সমবেশে অংশ নিয়ে থাকে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর মাধ্যমে প্রতিবছর এই শিশু সমাবেশে বাংলাদেশের একটি সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দল অংশ গ্রহণ করে। এই শিশু সমাবেশে ২জন ছেলে শিশু ও ২ জন মেয়ে শিশু জুনিয়র অ্যাম্বাসেডর হিসেবে বাংলাদেশর প্রতিনিধিত্ব করবে।
শনিবার রাতে ড্রাগন এয়ার ওয়েজের একটি বিশেষ ফ্লাইটে সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দলটি জাপানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় বলে জানান রাইন চাকমার বাবা মনতোষ চাকমা।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনতোষ চাকমা বলেন- আমার মেয়ে রাইন চাকমা ছোটকাল থেকেই নাচ-গান কবিতা পাঠে উৎসাহী। রাঙামটির বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও সে নিয়মিত পারফরম্যান্স করে। এবারই প্রথম জাপানের চিলডেন্স কনভেশনে ব্রীজ কিডস্ প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণের বিরল সুযোগ পেল সে। আমি ভীষণ খুশি। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের মেয়েরা সাংস্কৃতিক ভাব বিনিময়ের মাধ্যমে বাংাদেশের সুন্দর ও চমৎকার একটা ছবি ও পরিচয় তুলে ধরতে সক্ষম হবে এবং বিশ্বশান্তি ও মানুষে মানুষে বন্ধুত্ব স্থাপনে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখতে সমর্থ হবে।
১৯৮৯ সাল থেকে জাপানের ফুকুওয়াকা শহরের প্রতিবছর জুলাই মাসে বিশ্বের বৃহত্তম এ শিশু সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। জাপান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিবছর সারাবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিশুরা এ সমাবেশে অংশ নেয়। বাংলাদেশের ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলে রয়েছে ১জন পিস অ্যাম্বাসেডর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর একজন প্রতিনিধি। সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিশুদের মধ্যে থেকে ৪জনকে বাছাই করা হয়। এরমধ্যে রাঙামাটির মেয়ে রাইন চাকমা জাপানে অনুষ্ঠিত ১১দিনব্যাপী বৃহত্তম শিশু সমাবেশে অংশ নেয়ার সুযোগ লাভ করে। রাঙামাটির লেকার্স পাবলিক স্কুল ও কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী রাইন চাকমার মা কল্পনা তালুকদার একজন শিক্ষক ও সংস্কৃতি অনুরাগী।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশিষ্ট নৃত্য শিল্পী ও শিক্ষক ফিফা চাকমা, শুক্লা ত্রিপুরা ও উৎপলা চাকমার তত্ত্বাবধানে আঞ্চলিক ও উচ্চাঙ্গ নৃত্য শিখেছে রাইন চাকমা। শিশুকাল থেকেই নাচের পাশাপাশি গান ও কবিতা চর্চাও কওে সে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা- অরুনেন্দু ত্রিপুরা বলেন- রাইন চাকমা এশিয়ান প্যাসিফিক চিলড্রেন্স কনভেনশনে অংশ নেয়াটা রাঙামাটিবাসীর জন্য সম্মান ও গৌরবের বিষয়। সারাদেশের শিশুদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে টিকতে পারাটা সহজ ব্যাপার নয়। তার জাপান সফর নিরাপদ ও সাফল্যমন্ডিত হোক এই কামনা করি।
উল্লেখ্য ১৪ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত জুনিয়র অ্যাম্বাসেডর হিসেবে বাংলাদেশের শিশু সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জাপানে অবস্থান করে ব্রীজ কিডস প্রোগ্রামের বিভিন্ন দেশের শিশুদের সঙ্গে বিশ্বের শান্তি -বন্ধুত্ব ও সাংস্কৃতি বিষয়ে ভাব বিনিময় করবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.