জলবায়ুর প্রভাবে যৌবন হারিয়ে মরণ দশায় চেংগী নদী।

Published: 04 Jul 2019   Thursday   

জলবায়ুর প্রভাব পড়েছে খাগড়াছড়ির পানছড়িতেও। গেল কয়েক দশক ধরে অব্যাহত গাছ-বাঁশ কাটার ফলে মরণ দশায় চেংগী নদী।

 

সত্তর, আশির দশকে পানিতে টুইটম্বুর ছিল চেংগী নদী। গভীরতা ছিল অনেক। চলত শত শত নৌকা। সড়ক যোগাযোগ সুবিধা না থাকায় মালামাল পরিবহনের পরিবহনের প্রধান মাধ্যম ছিল নৌকা। নৌকায় মালামাল পরিবহন করত ব্যবসায়ীরা। এখন নৌকা চলাতো দূরের কথা ধান চাষের জন্যও পানি পাচ্ছে না কৃষক। নদীর দু’পাড় এখন শুধু বালুচর। প্রমত্ত চেংগী নদী হেঁটে পার হয় এলাকাবাসী।

 

অনেকের ধারনা,অব্যাহত কাঠ, বাঁশ কাটার, জুম চাষী অব্যাহত পাহাড়ে মাটি খুঁড়ে জুম চাষ করার ফলে পাহাড় উম্মুক্ত হয়ে পড়েছে এবং মাটি ক্ষয় হয়ে নদীর তলদেশ ভরাট করছে। তাই উপজেলার চেংগী নদী, পূজ গাং নদী, তারাবন ছড়া নদীর এখন মরন দশা। বৃষ্টি পানির সঙ্গে পাহাড়ের মাটি আর বালি এসে নদীর তলদেশ ভরাট করছে। নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারনে বৃষ্টি হলেই বন্যায় প¬াবিত হয় নিুাঞ্চল। দেখা দেয় তীর ভাঙ্গন।

 

পানছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা অরুণাংকর চাকমা বলেন- বৈশ্বিক জলবায়ুর প্রভাবের কারনে আষাঢ় মাসেও বৃষ্টির দেখা পাচ্ছেনা কৃষক। চে্গংী নদী,পূজগাং নদীসহ উপজেলার বিভিন্ন নদীগুলোতেও পানি কমে গেছে। তাই কৃষকরা প্রয়োজনীয় পানির অভাবে কৃষিকাজ করতে পারছেনা।

 

পানছড়ি উপজেলার বয়োবৃদ্ধ মধু মঙ্গল কাবারী ও করপ চন্দ্র কার্বারী বলেন,সত্তর, আশির দশকে নৌকা চলত। মালামাল পরিবহনের প্রধান মাধ্যম ছিল নৌকা। রাঙামাটি, মহালছড়ি, খাগড়াছড়ি, পানছড়ির ব্যবসায়ীরা নৌকায় করে মালামাল পরিবহন করত। আমরাও নৌকায় করে রাঙামাটি আসা-যাওয়া করতাম। তখন পানিতে পরিপূর্ণ ছিল চেঙ্গী নদী।

 

পানছড়ি উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বকুল চন্দ্র বলেন,পাহাড়ে আগের মতো গাছ, বাঁশ নেই। বন দস্যুদের কারনে এমন দশা হয়েছে। মাটি ক্ষয় হয়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়েছে। এলাকার আবহাওয়া পরিবর্তন হয়েছে। গমর কালে অতিরিক্ত গরম, শীতকালে অতিরিক্ত শীত আর বর্ষা মৌসুমেও আগের মতো বৃষ্টি হয় না।

 

খাগড়াছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি সাংবাদিক প্রদীপ চৌধুরী বলেন-পানি সুরক্ষার জন্য পানছড়ি উপজেলায় রাবার ড্যাম বসানো হলেও পরিবেশ সুরক্ষায় কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। একদিকে বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রভাব আর রাবার ড্যামের প্রভাবে পানছড়ি চেংগী নদীর এ অবস্থা হয়েছে। বর্ষায় নদীর দু’পাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে। পাড় ভাঙ্গন রোধের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। উপকারের পরিবর্তে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে কৃষক। অচিরেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য তিনি আহবান জানান।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

 

 

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত