রাঙামাটির প্রত্যন্ত অঞ্চল রাজস্থলী উপজেলায় কয়েক যুগ আগে বিদ্যুৎ সম্প্রসারিত হলেও ১শ ৬০টি গ্রামের মধ্যে ১শত ১৫টি গ্রামে বিদ্যুতের আলো নেই । ফলে এলাকার মানুষের দুভোর্গের চরম আকারের পাশাপাশি ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আশি দর্শকের পরে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ আমলে উপজেলা গঠনের পর ১৯৮৪ইং সালে রাজস্থলী উপজেলা বিদ্যুৎ সম্প্রারণ করেন। সেই সময়ের বিদ্যুৎ যতটুকু সম্প্রারণ করা হয়েছে। এরপর আর খুব বেশি সম্প্রারণ কাজ এগোতে পারেনি। বিগত ৩৬ বছরের দেখা গেছে, সরকার দল ক্ষমতাও পরিবর্তন হচ্ছে, দেশ উন্নয়ন হচ্ছে দ্রুত গতিতে। তবুও, এখানকার জনগণ টেলিভিশন কিংবা বিভিন্ন মিডিয়া দেখে শতভাগ গ্রামের বিদ্যুতায়ন প্রত্যাশা মিলছে। কিন্তু মিলছে না এলাকার মানুষের বিদ্যুতের ।
সূত্রে আরো জানা গেছে, ৩নম্বর বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের সাম্প্রতিক বিগত আওয়ামীগ সরকার আমলে স্যাটালার জোন ও প্রায় পাহাড়ী গ্রামে বিদ্যুৎ সম্প্রারণ করা হয়েছে। এদিকে রাজস্থলী উপজেলা সদরের তালুকদার পাড়া, হাজী পাড়া ও রাজস্থলী কলেজ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সম্প্রারণ করেছে।। তবে, সহজে বিদ্যুৎ সম্প্রারণ করতে পারে। এমন অর্ধশতাধিক গ্রামে বিদ্যুৎ নেই।
তথ্যানুসন্ধানে আরো জানা গেছে, সম্প্রতিক বাঙ্গালহালিয়া সংলগ্ন বান্দরবান সড়কের পাশের্^ বিদ্যুৎ সাব কেন্দ্র স্থাপন করে আওয়ামী লীগ সরকার। উন্নয়ন দিগন্ত একধাপ পেল রাজস্থলী উপজেলা। যে সমন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সম্প্রসারিত হয়েছে। সেখানে সবাই আলোকিত ডিজিটাল জীবন যাপন করছে। তথ্য প্রযুক্তি যুগ একটু হলেও তাদের উম্মোচন শুরু হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ১নম্বর ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের গ্রামের সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬০টি । কিন্তু বিদ্যুৎ সম্প্রসারিত গ্রামের মাত্র ১০টি। তার মধ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ আমলে সম্প্রারিত রয়েছে ৮টি গ্রাম। বাকী ৫০টির গ্রামে কবে, কখন বিদ্যুৎ আসবে কেউ জানেনা। আদৌ বিদ্যুৎ আসবে কিনা, কেউ জানে না । ১নম্বর ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ১নম্বর ওর্য়াডে সাবেক ইউপি সদস্য সাদুরাম ত্রিপুরা বিশ^াষ বিদ্যুৎ জঙ্গলে যায় না। আর জঙ্গলের মানুষেরা বিদ্যুৎ ব্যবহার করতেও জানেনা। অথচ তিনি (সাদুরা ত্রিপুরা) কাপ্তাই নদীর যেখানে শুরু সেখানে তার বাড়ি। কাপ্তাই লেকের বাধেঁর বিদ্যুতের উৎপক্তি তিনি এখনো জানে না। ১নম্বর ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুশান্ত প্রসাদ তঞ্চগ্যা জানান, এ ইউনিয়নের ঐতিয্যবাহী রুপরেখা রয়েছে নানা রকম। যোগাযোগ, বিদ্যুতায়ন ও প্রযুক্তি প্রসার হলে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন, ক্ষেত ফসলের আয় বৃদ্ধি, দ্রুত শিক্ষা হার ও জীবন যাত্রা অমুল পরিবর্তন সম্ভাব। বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় সোলার বিতরণ করলেও তা সবার জন্য সম্ভব হচ্ছে না।
২নম্বর গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এ ইউনিয়নের প্রায় ৫৫টি গ্রাম রয়েছে। বিদ্যুতের আওতায় গ্রামের সংখ্যা ৭টি। বাকী ৪৮টি গ্রামের জনগন রয়েছে বিদ্যুতের অপেক্ষায়। কারণ বাড়ী চালের উপরের ৩৩ হাজার ভোল্টের খাম্বা ও তার । অনেক সময় এই ৩৩ হাজার বিদ্যুৎ তারের ভোল্টেজের শর্টে কঠিন চিকিৎসা, বিকলাঙ্গ ও মারা যাওয়ার ঘটনা রয়েছে।। তবুও তাদের কপালে বিদ্যুৎ আলো জুটেনি। এ গ্রামগুলো হচ্ছে, গাইন্দ্যা পাড়া প্রায় ৩ শতাধিক ঘর, ক্রংসাগই পাড়া ৫০টি, লংগদু ও লংগদু পূর্নবাসন পাড়া ৫০টি, ওগাড়ী পাড়া ৬০টি, ইয়ং¤্রং পাড়া ৪৫টি, তরগুমুখ পাড়া ৪০টি। এছাড়া উপজেলা সদরের পাশের্^ ৩কিমিঃ মধ্যে ৫০০টি ঘর মানুষের জীবন চলছে হাটতে আলো হাটতে কালো অন্ধকার। অথচ এটি রাজস্থলী উপজেলা সদর ইউনিয়ন। এখানে আছে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী, উপজেলা পরিষদ, হাসপাতাল সবকিছু । আছে আরো উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দিক নির্দ্দেশক নেতাকর্মী। এ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উথান মারমা বলেন, বেশিভাগ গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকায় জনগনের চাহিদা মোতাবেক সোলার বিতরণ করার সম্ভব হচ্ছে না। দলমত নির্বিশেষে এই ইউনিয়নটিকে দ্রুত উন্নয়ন করার প্রয়োজন বলে মনে করেন।
৩নম্বর বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের গ্রামের সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৪৫টি। এ ইউনিয়নটি অনেকটা সমতল এলাকায়। ফলে সুপেয় পানি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ ও জনগনের নাগরিক সুবিধা রয়েছে উন্নতমানে। এ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঞোমং মারমা বলেন, নানা প্রতিকুলতা কারণে ৮টি গ্রামে বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে, চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, অচিরের সুব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব হবে।
আওয়ামীলীগের রাজস্থলী উপজেলা শাখা সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উবাচ মারমা বলেন, বিদ্যুৎ সম্প্রসারণের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শীঘ্রই (দাদা) এমপি দীপংকর তালুদার সাথে আলোচনা করে, স্থানীয় জনগনের চাহিদা মোতাবেক বিভিন্ন গ্রামে বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ করা হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.