বান্দরবানে অপহৃত আ’লীগ নেতার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার সদর উপজেলা কুহালং ইউনিয়নের শীলক আগা মুড়া নামক এলাকার একটি পাহাড়ের খাদ থেকে অপহৃতের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত চথোয়াই মং মারমা পৌর আ’লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে ছিলেন।
উল্লেখ্য, গেল বুধবার রাত নয়টার দিকে কুহালং ইউনিয়নের উজি হেডম্যান পাড়ার নিজ খামার বাড়ি থেকে তাকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অপহরণের রাতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। কারা তাকে অপহরণ করে হত্যা করেছে তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। স্থানীয় আ’লীগ এই অপহরণ ও হত্যাকান্ডের পেছনে জেএসএসকে দায়ী করেছে। তবে স্থানীয় জেএসএস নেতারা তা অস্বীকার করেছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার সকালে কুহালং ইউনিয়নের জর্ডান পাড়া ও কাট্টলি পাড়া দুই পাড়ার স্থানীয় ২০ থেকে ২৫জন লোক অপহৃত আ’লীগ নেতার খোঁজে বেব হয়। তাদের সঙ্গে সাথী হিসেবে ছিল স্থানীয় কয়েকটি পাহাড়ি শিকারী কুকুর। পাহাড়ি জঙ্গল ও ঝিড়িতে খুঁজতে থাকে স্থানীয়রা। খুঁজতে খুঁজতে এক পর্যায়ে কুকুরগুলো লাশের সন্ধান পায়। কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করতে থাকলে সন্ধানকারীরা অপহৃতের লাশ চিহিৃত করে। এরপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে খবর দেয়।
৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য অংসাহ্লা মারমা বলেন, পুলিশ, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয়রাও অপহৃত আ’লীগ নেতাকে উদ্ধার অভিযানে নামে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে জর্ডান ও কাট্টলি পাড়ার পাড়াবাসিরা স্থানীয় কুকুর নিয়ে অপহৃতের সন্ধানে নামে। দুপুর একটার দিকে কুকুরগুলোর মাধ্যমে পাড়াবাসিরা লাশের সন্ধান পায়। পরে পুলিশকে খবর দেয়ার পর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
এদিকে অপহৃতের লাশ উদ্ধারের পর স্থানীয় আ’লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো: ইসলাম বেবী, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক লক্ষীপদ দাশ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো: জাহাঙ্গীর, কুহালং ইউপি চেয়ারম্যান সানুপ্রু মারমা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা আ’লীগ নেতাকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূল শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেয়ার হুমকি দিয়েছেন।
জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো: ইসলাম বেবী জানান,অপহৃত চথোয়াই মং মারমা পৌর আ’লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে ছিলেন। তিনি পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক পৌর কাউন্সিলর ছিলেন।
জেলা আ’লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক লক্ষীপদ দাশ আ’লীগ নেতা অপহরণ ও হত্যার পেছনে জেএসএস দায়ী করেছেন। তবে জেলা জেএসএস এর সভাপতি উছোমং মারমা এ অভিযোগ অস্বীকার দাবী করে বলেন, জেএসএস খুন, গুম, অপহরণের সঙ্গে জড়িত নয়। অস্ত্র দিয়ে রাজনীতি করে না জেএসএস। তিনি এই অপহরণ ও হত্যাকান্ডের তীব্র্র নিন্দা জানিয়ে এই অপহরণ ও হত্যাকান্ডের পেছনে যারা জড়িত সেইসব অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সদর থানা ওসি মো: শহিদুল ইসলাম জানান, লাশের উদ্ধারের জায়গাটি খুবই দুর্গম। একদিকে দুর্গম অপরদিকে বৃষ্টি হওয়ার কারণে লাশ উদ্ধারে বেগ পেতে হয়েছে। শনিবার দুপুর একটার দিকে সদর উপজেলা কুহালং ইউনিয়নের শীলক আগা মুড়া নামক এলাকার একটি পাহাড়ি খাদ থেকে লাশটি পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণ করা হচ্ছে অপহৃত আ’লীগ নেতাকে অপহরণের রাতেই হত্যা করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মো: জাকির হোসেন মজুমদার জানান,দুপুরের দিকে লাশের সন্ধানের বিষয়টি জানানো হয়। এরপর পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। অপহরণ ও হত্যাকান্ডের বিষয়ে এখনো মামলা হয়নি। অপহরণ ও হত্যাকান্ডের পেছনে কারা জড়িত তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নিহতের স্ত্রী ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পেরেছি হত্যাকারীরা জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত ছিল। সবার হাতে অস্ত্র ছিল।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.